দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী মাম্পি দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রেফতারি নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে, জানতে চেয়েছে আদালত।এই নিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের ব্যাখ্যা তলব করেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। তারপরই বিজেপি নেত্রী পিয়ালী দাসকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় যে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ তাও এদিন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতির জয় সেনগুপ্ত।
পিয়ালির বিরুদ্ধে ৪৪৮, ৩৪১, ৩২৩, ৩২৫ সহ সমস্ত জামিন যোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। প্রথমে তাঁকে সাক্ষী হিসেবে থানায় ডাকা হয়েছিল। তারপর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৯৫এ ধারায় পিয়ালির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় পুলিশ। পিয়ালি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণের আবেদন জানানো সত্বেও তাঁকে গ্রেফতারির নির্দেশ দেয় বসিরহাট আদালত। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মাম্পি।
পিয়ালির আইনজীবী রাজদীপ মজুমদারের বক্তব্য ছিল, সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য মামলা এটি। কিন্তু আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে উল্টে ১২ দিনের জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে তাঁর মক্কেলকে। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও অমান্য করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার, ওসি, তদন্তকারী অফিসার এমনকি নিম্ন আদালতের বিচারক সকলকেই হাইকোর্টে ডাকা উচিত বলে দাবি করেন তিনি।
সন্দেশখালি নিয়ে সম্প্রতি একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তার মধ্যে একটিতে বিস্ফোরক দাবি করে এক মহিলা বলেছেন, সাদা কাগজে সই করিয়ে পরে সেখানে ধর্ষণের অভিযোগ লেখানো হয়েছিল এবং তা করিয়েছিলেন এই পিয়ালিই।সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম মুখ পিয়ালিকে এই ইস্যুতে তলব করেছিল পুলিশ। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে তিনি গত মঙ্গলবার বসিরহাটের মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
মাম্পির আইনজীবী বলছেন, তাঁর বাড়িতে যখন নোটিস লাগানো হয়েছিল তখন জামিন অযোগ্য ধারা ছিল না। কিন্তু তিনি যখন আত্মসমর্পণ করেন সেই সময়ে জামিন অযোগ্য ধারার কথা বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়! এছাড়া নিম্ন আদালতে কেস ডায়রিও পেশ করেনি পুলিশ, এমন অভিযোগ করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, ''এর পিছনে কার মাথা কাজ করছে? কার পরিকল্পনা? পিয়ালি দাসকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া উচিত জেল থেকে।''
পিয়ালি ওরফে মাম্পি দাস ভেবেছিলেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু তা তো মেলেনি, উল্টে তাঁর জেল হেফাজত হয়। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতেই পিয়ালিকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছিল আদালত। বলা হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে শুক্রবার পর্যন্ত নিম্ন আদালতে নতুন করে কোনও মামলা করতে পারবে না পুলিশ। মাম্পির বিরুদ্ধে একটি ধারা যুক্ত করার পাশাপাশি তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য।