দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের র্যাগিংয়ে মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিল নদিয়ার ছেলেটি। কিন্তু উচ্চশিক্ষা আর নেওয়া হয়নি। কারণ জীবনে নেমে এসেছিল মর্মান্তিক কালো রাত। গোটা বাংলায় ওই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার স্মৃতি আবার উসকে উঠল মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর। কারণ মৃত দাদার ভাইও আজ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ। কিন্তু দাদার কথা সে ভুলতে পারেনি। পরীক্ষার ফলের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে জানায়, “শুধু মনে পড়ছে, অঙ্কের জটিল সমস্যার সহজ সমাধান খুঁজে দিত দাদা। এখন দাদা নেই, কিন্তু ঘরের আনাচকানাচে ওর বইখাতার স্তূপ ওর কথা মনে করায়।”
জানা গিয়েছে, যাদবপুরকাণ্ডে নিহত পড়ুয়া মাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৮৭ শতাংশ নম্বর। এই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাস কয়েক আগে উত্তাল হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। কিশোরের বাবার কাছে ফোন গিয়েছিল, ছেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার পর এসে দেখেন সব শেষ।
ছোট ছেলের মাধ্যমিক পাসের খবরেও হাসি নেই মুখে। ফোনের ওপারে বাবার স্বরে আক্ষেপের সুর, “আজকের দিনটাতে বড় ছেলেটা থাকলে কতই না আনন্দ করত! ছোট ভাইটাকে হয়তো রান্না করে খাওয়াত।” তিনি আরও বলেন, “চোখের সামনে ওই দিনটা এখনও ভাসে, যে দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ছেলেকে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম ছোটটাকে নিয়ে। ক্যাম্পাসে পৌঁছে যাওয়ার পর হঠাৎই অঝোরে কাঁদতে শুরু করেছিলাম তিনজনেই। কিন্তু কেন সেই কান্না এসেছিল, তখন কেউই বুঝতে পারিনি।”
ছোট ছেলে মাধ্যমিক পাস করলেও বাড়ি যেন এখনও অন্ধকারে। “দাদা নেই। সে কেন চলে গেল, সেই রাতে কী হয়েছিল– প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে কিলবিল করছে! ঘুম হচ্ছে না, ভাল লাগছে না কিচ্ছু। ও থাকলে হয়তো রেজাল্ট আরও ভাল হতে পারত।” জানায় সদ্য মাধ্যমিক পাস করা কিশোর। জানা গিয়েছে, যাদবপুরকাণ্ডের পর বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ছোট ছেলেটি। রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালে মাসে এক বার করে কাউন্সেলিং করিয়ে নিতে হচ্ছে। এত কিছুর পরও নিহত পড়ুয়ার বাবার সাফ বক্তব্য, ছেলের বিচার পাওয়ার জন্য লড়াই থেমে থাকবে না।