দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:সাধারণ দিনগুলোতে ঘুম ভাঙতে দেরি হলেও মহালয়ার সকালে বাঙালির রুটিন আলাদা। কেউ অ্যালার্ম সেট করে, কেউ আবার রাতভর জেগে থেকে ভোর চারটের অপেক্ষা করে শুধু বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ শোনার জন্য। এরপরই টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে ওঠে অসুর নিধনের কাহিনি। সেই চিরচেনা নস্ট্যালজিয়ার আবহে এ বার নিঃশব্দে জায়গা করে নিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
কবে, কীভাবে এআই নিঃশব্দে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঢুকে পড়েছে, তা হয়তো খেয়ালই করা যায়নি। আজ লেখালিখি থেকে শুরু করে তথ্য খোঁজা, এমনকি ছবিতে জামার রং বদলানো—সবেতেই ব্যবহৃত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই প্রযুক্তি দিয়েই ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা। আর এবার সেই এআই-এর হাত ধরেই আসছে মহালয়ার বিশেষ সংস্করণ।
সদ্য প্রকাশ্যে এসেছে এআই ও ভিজ্যুয়াল এফেক্টসের মাধ্যমে তৈরি মহালয়ার প্রথম ঝলক। মুক্তির পর মুহূর্তেই তা দর্শকদের নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ দেখেছেন এই অভিনব উপস্থাপনা, আর নির্মাতারা পেয়েছেন তুমুল সাড়া।
এটির পরিচালক তথা জনপ্রিয় ভিজ্যুয়াল এফেক্টের শিল্পী সৌরভ দাস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “মহালয়া আমাদের একটা নস্ট্যালজিয়ার জায়গা। এই দিনটি প্রতি বছর মানুষ ঘুম থেকে ভোরবেলা ওঠে কিছু দেখবে বলে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সিনেমাটিক যে ধারাবাহিকতা আসছে প্রত্যেক বার, সেটা আর দেখা যাচ্ছে না। বাংলার এই মহালয়ার সঙ্গে এআইয়ের মাধ্যমে যদি আমরা একটা আন্তর্জাতিক ‘ভাইব’ যোগ করতে পারি তাহলে সেটা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে পারব। বিষয়টা একই থাকবে, খালি প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আমরা একটু এগিয়ে যেতে পারব। আমাদের আবেগকে নিয়ে আরও একটু এগিয়ে যেতে পারব।”
এআই নির্মিত মহালয়ার বিশেষত্ব নিয়েই মুখ খুললেন পরিচালক সৌরভ দাস ও প্রযোজক সৌমি দত্ত রায়। তাঁদের কথায়, দুর্গার মুখের আদল গড়া হয়েছে তাঁদেরই এক ছাত্রী অদ্বিতীয়া মুখোপাধ্যায়কে ভিত্তি করে, আর মহাদেবের চেহারায় ফুটে উঠেছে এক ছাত্রের মুখাবয়ব। পরিচালকের দাবি, এ বার এই প্রয়াস পরীক্ষামূলক হলেও সফল হলে আগামী বছরে আরও চরিত্র যুক্ত করে মহালয়াকে নতুন রূপ দেওয়া হবে।
এখন ঝলক প্রকাশ্যে এলেও মহালয়ার দিনই সকাল পাঁচটায় তাঁদের চ্যানেল এবং পেজে প্রকাশিত হবে এইআই নির্মিত মহালয়া। সৌরভ জানিয়েছেন, “এটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেখা যাবে। কোনও সাবস্ক্রিপশন বা কিছু লাগবে না। আমরা সবাইকে এটা দেখাতে চাইছি।”