দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দেবী দুর্গা মাতৃশক্তির প্রতীক। সোনালি আভায় দীপ্ত, লাবণ্যবতী রূপেই তিনি বিরাজমান। শরতের চার দিন ভুবনমোহিনী সত্তা নিয়ে তিনি অবতীর্ণ হন মর্ত্যে। কিন্তু আসলে কেমন তাঁর গাত্রবর্ণ? বেদ, পুরাণ আর শাস্ত্র এ বিষয়ে কী বর্ণনা দিয়েছে?পৌরাণিক কাহিনি বলছে, দুর্গা হবেন অতসী পুষ্পবর্ণা। পল্লি বাংলায় যে অতসী ফুল দেখা যায়, তার রং সোনার মতো উজ্জ্বল। তেমনই হবে দেবীর গড়ন। ঠিক সে ভাবেই আবহমানকাল থেকে দুর্গা গড়েন বাংলার মৃৎশিল্পীরা।
মৎসপুরাণ মতে দেবী তপ্তকাঞ্চনবর্ণা। অর্থাৎ উত্তপ্ত সোনার (সোনা গলালে তপ্ত তরল সোনার যে রঙ হয়) মতো তাঁর গায়ের রং। দুর্গার ধ্যান মন্ত্রে তাঁর তপ্তকাঞ্চনবর্ণা রূপের কল্পনা করা হয়। বৃহদ্ধর্মপুরাণ অনুযায়ী, রামের জন্য দুর্গাপুজোর বন্দোবস্ত করেছিলেন ব্রহ্মা। দক্ষিণায়ণ দেবতাদের নিদ্রাকাল তাই বোধন (অকাল বোধন) করতে হবে। দেবী কুমারীর বেশে এসে ব্রহ্মাকে বিল্ববৃক্ষমূলে, মানে বেল গাছের কাছে দুর্গার বোধন করতে বলেন। দেবতারা মর্ত্যে এসে দেখেন, এক দুর্গম স্থানে বেল গাছের সবুজ পাতার মধ্যে ঘুমিয়ে রয়েছে একটি তপ্তকাঞ্চনবর্ণা বালিকা। ব্রহ্মার বুঝতে দেরি হয়নি যে, এই বালিকাই দুর্গা। বোধন স্তবে সেই বালিকাকে জাগিয়ে তোলেন ব্রহ্মা। বালিকা রূপী দেবী দুর্গাও তপ্তকাঞ্চনবর্ণা।
যুগ যুগ ধরে দেবীর গাত্রবর্ণের বর্ণনায় গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা ইত্যাদি বিশেষণ ব্যবহৃত হয়। এমনও বলা হয় যে, শিবজায়া উমার দেহের রং হবে শিউলি ফুলের বোঁটার মতো। কিন্তু শুধুই কি সোনার মতো উজ্জ্বল রূপে দুর্গা পূজিতা হন বাংলায়? বঙ্গদেশ বৈচিত্রের আধার। প্রতি বাঁকে বাঁকে ব্যতিক্রম। লাল, নীল এমনকী কৃষ্ণবর্ণের দুর্গারও আরাধনা হয় বহুত্ববাদের জন্মভূমি বাংলায়।