দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :ইন্টারনেটের বিদ্রোহী শিশু অপূর্ব মুখিজা ফের বিতর্কে জড়ালেন, আর সেই ঝড়ের কেন্দ্রবিন্দুতে তার প্রাক্তন প্রেমিক উৎসব দাহিয়া। রবিবার, ১৭ আগস্ট দাহিয়া ইনস্টাগ্রামে নিজের মূল গান ‘Cute Little Red Flag’ প্রকাশ করেন, যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। তবে প্রশ্ন উঠছে—উৎসব দাহিয়া কে, এবং ঠিক কী কারণে তিনি এই আলোড়নের সূচনা করলেন?
অপূর্ব মুখিজার প্রাক্তন প্রেমিক উৎসব দাহিয়া শুধুই স্টোরিটাইম ভিডিওর আরেকটি নাম নন। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে তিনি নিয়মিত ভ্রমণ ও সঙ্গীত ভিডিও শেয়ার করেন ইনস্টাগ্রামে, যেখানে বর্তমানে তার ৮৮.৩ হাজার ফলোয়ার রয়েছে (২০ আগস্ট সকাল ৬.৪৫ পর্যন্ত)। তবে তার পরিচয় কেবল ডিজিটাল দুনিয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়। ইনস্টাগ্রাম বায়ো অনুযায়ী তিনি একজন বিনিয়োগ ব্যাংকারও। লিঙ্কডইন তথ্য অনুযায়ী, তার কর্পোরেট যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালে মরগান স্ট্যানলিতে বিশ্লেষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে। ২০২২ সালে তিনি সহযোগী পদে উন্নীত হন এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফার্মের সিডনি অফিসে সহযোগী হিসেবে বর্তমান দায়িত্ব নেন। এর আগে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি চণ্ডীগড়ের পিইসি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন।
১৭ আগস্ট ইনস্টাগ্রামে নিজের অরিজিনাল ট্র্যাক ‘কিউট লিটল রেড ফ্ল্যাগ’ প্রকাশ করার পর রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গেল উৎসব দাহিয়ার গান। প্রথমে শিরোনামটি মনে হয়েছিল অপূর্ব মুখিজার জনপ্রিয় স্টোরিটাইম ভিডিওতে প্রায়শই ব্যবহৃত একটি বাক্যাংশকে মজার ছলে উল্লেখ করছে। তবে এটি নিছক আরেকটি সাধারণ রিলিজ ছিল না। আকর্ষণীয় হুক, তীক্ষ্ণ লিরিক্স আর আরও ধারালো ক্যাপশনের মিশ্রণে ভক্তরা দ্রুতই জল্পনা শুরু করেন—ট্র্যাকটি কি তবে দাহিয়ার প্রাক্তন প্রেমিকা অপূর্ব মুখিজাকেই উদ্দেশ্য করে তৈরি?
অপূর্ব মুখিজাকে ঘিরে উৎসব দাহিয়ার পরোক্ষ আক্রমণ? গান প্রকাশের পাশাপাশি দাহিয়া একটি দীর্ঘ নোট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সরাসরি নাম না করেও স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল তার দিকে। সেখানে তিনি লিখেছিলেন— “যদি বাজে কথা ছড়ানো বন্ধ না করো, আমি প্রমাণ সামনে আনব। সহানুভূতি পাওয়ার জন্য বা কনটেন্ট বানাতে মিথ্যা গল্প ব্যবহার কোরো না। বড় ফলোয়িং থাকলেই কাউকে উসকে দিয়ে অন্যদের হেয় করার অধিকার মেলে না।” তার এই বক্তব্য মুহূর্তেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। অনেকেই মন্তব্য করেন, এটি যেন অপূর্ব মুখিজার গল্প বলার ধরনকেই উদ্দেশ্য করে লেখা, যেখানে তিনি প্রায়ই প্রাক্তন বা কথিত “টক্সিক” সম্পর্ক নিয়ে পরোক্ষ ইঙ্গিত দেন।
দাহিয়ার গান কি সরাসরি প্রাক্তনকে উদ্দেশ্য করে লেখা? ট্র্যাকটির কথাগুলো যেন ক্যাপশনের মতোই ইঙ্গিতপূর্ণ ছিল। সবচেয়ে আলোচিত লাইন ছিল—“পুছা ম্যানে ঘাটিয়া কিয়ুন বোলা মুঝে দুনিয়া কে লিয়ে, কেহতি বেবি ইয়ে তো সব ধান্দা হ্যায় মেরে লিয়ে।”এই লাইনটি শুনে অনেক ভক্তের মনে পড়ে যায় মুখিজার ব্রেকআপের পর করা একটি ভিডিওর কথা। সেই ভিডিওতে তিনি অনুপম মিত্তলের সঙ্গে মজার ছলে একটি ক্লিপ শেয়ার করেছিলেন, যেখানে প্রাক্তন সঙ্গীদের ‘ঘাটিয়া লগ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। যদিও মুখিজা কখনও সরাসরি কারও নাম নেননি, ভক্তদের একাংশ ধরে নিয়েছিলেন যে তা দাহিয়ার উদ্দেশেই বলা। তাই এই গানের মাধ্যমে দাহিয়া যেন সরাসরি সেই মন্তব্যের জবাব দিয়ে নিজের দিকটা সামনে আনছেন।
গানটিতে দাহিয়া শুধু শব্দের খেলা করেই থেমে থাকেননি, তিনি মুখিজার ভিডিওর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাবও দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রতারক বা নির্যাতনকারী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরও তিনি মুখিজা ও তার ব্যবস্থাপনা দলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। তবে, তিনি শীতলভাবে মন্তব্য করা হয়েছে যে, “তুমি কেউ নও, কৃতজ্ঞ থাকো যে তুমি তার সঙ্গে ডেটও করেছ।” এই লাইন তার প্রতিক্রিয়ার স্বরকে নতুন মোড় দেয়— “আমাকে বলা হয়েছে, ‘তুমি কেউ নও, খুশি হও যে তুমি তাকে ডেট করতে পেরেছ।’ ঠিক আছে, সেই ‘কেউ নেই’ থেকে একটি বার্তা—আমি এখনও এখানে, এখনও দাঁড়িয়ে আছি। তোমার ফলোয়ার সংখ্যা কিছু বলতে পারে, কিন্তু সত্য অনুসারীর কাছে তার কোনো মান নেই।”
প্রাক্তন প্রেমিকের প্রতারণার অভিযোগের মাঝেই অপূর্ব সোশ্যাল মিডিয়ায় রহস্যময় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী এই তরুণী সরাসরি অভিযোগে মন্তব্য না করলেও সাম্প্রতিক গল্পের মাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি এগুলোকে হাসিমুখে কাটিয়ে উঠেছেন। এক গল্পে তিনি লিখেছেন, *“আমি হঠাৎ করেই এটি কাটিয়ে উঠেছি, আর এখন আমি হাসি থামাতে পারছি না।” আরেকটি গল্পে তিনি উল্লেখ করেছেন, “আমি কেবল তখনই পাঠ শিখি, যখন নিজেকে তা শেখাই।”