দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দাগ লাগলেই ভেঙে পড়বে গদি। বিরোধীদের তীব্র আপত্তি উপেক্ষা করেই লোকসভায় পেশ হল প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণ বিল, যেখানে গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ পাওয়া যাবে না। বুধবার বিক্ষোভমুখর পরিবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি সংবিধান সংশোধনী বিল উপস্থাপন করেন। এই প্রস্তাব অনুযায়ী গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত কোনও প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ আঁকড়ে থাকতে পারবেন না। তবে বিলটি নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এদিন ভারতের গণতন্ত্রে নেমে এসেছে এক ‘কালো দিন’।
বুধবারই লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। ওই বিলগুলি মূলত সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে আনা। গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনও মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী নিজের পদের জন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ না পান, সেটাই নিশ্চিত করা হবে ওই বিলে। প্রস্তাবিত ওই বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপদে আসীন অবস্থায় কেউ যদি গুরুতর অপরাধে ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন তাহলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে।
কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবির বিলটির বিরোধিতা করেছে। ইন্ডিয়া জোটের বক্তব্য, এটা আসলে বিরোধীদের নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। এদিন শাহের বিল পেশের সঙ্গে সঙ্গে তুমুল হট্টগোল শুরু করে বিরোধী শিবির। ওয়েলে নেমে প্রতিবাদে শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। ছিঁড়ে ফেলা হয় বিলের কপি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা অমিত শাহর কাছে চলে যান। বাধ্য হয়ে অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে হয়।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, এই বিল আসলে সুপার এমার্জেন্সি লাগু করার চেষ্টা। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে চিরতের ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর হিটলারোচিত আঘাত হানা হচ্ছে এই বিলের মাধ্যমে। এটা আসলে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টার শামিল।