kolkata

1 year ago

Mamata Banerjee : কলকাতাতেই ধর্না মমতার! শুক্রে শুরু কর্মসূচি

Mamata Banerjee (File Picture)
Mamata Banerjee (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসতে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্না কর্মসূচির দিন স্থির করে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মালদহের সরকারি কর্মসূচি থেকে তিনি জানিয়ে দিলেন ধর্নাস্থানও। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বকেয়া না দিলে, ২ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আগামী শুক্রবার থেকে তিনি কলকাতার রেড রোডে বাবা সাহেব অম্বেডকরের মূর্তির সামনে ধর্নায় বসবেন। ওই দিন দুপুর ১টায় শুরু হবে কর্মসূচি। বস্তুত, গত বছর মার্চ মাসে, একই দাবিতে একই জায়গায় দু’দিনের ধর্না করেছিলেন মমতা। তবে এ বার তাঁর ধর্না কত দিন চলবে তা মালদহের সভা থেকে স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী। মালদহের সভায় ধর্নাস্থান হিসাবে বাবা সাহেব অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশ বললেও বহরমপুরের সভায় বলেন, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে হবে ধর্না। তবে কলকাতায় যে কর্মসূচি হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বুধবার। 

মমতা যখন কলকাতাতেই ধর্না হবে বলে ঘোষণা করছেন, তার কিছু ক্ষণ আগেই সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি রওনা হয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। যে হেতু সামনেই লোকসভা ভোট, তাই এ বার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হবে না। বুধবার অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে। চলবে আগামী ১০ দিন। ফলে অভিষেক গোটা অধিবেশন দিল্লিতেই থাকবেন, না কি নেত্রীর কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তা নিয়ে শাসকদলের মধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মধ্যে নানা বিষয়ে মতের বৈপরীত্য প্রকাশ্যে এসেছে। সেই প্রেক্ষাপটে কৌতূহল হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে। যদিও মঙ্গলবার মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াণ দিবসে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে অভিষেক লিখেছিলেন, ‘‘দুঃখজনক হল, গান্ধীজির নামাঙ্কিত প্রকল্পেই (এমজিএনআরজিএস আজ আমাদের শ্রমিকেরা শোষিত হচ্ছেন, বঞ্চিত হচ্ছেন!’’ পাশাপাশি লিখেছিলেন, ‘গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি সেই বঞ্চিতদের লড়াইয়ে অবিচল থাকার অঙ্গীকার করছি।’’

গত অক্টোবরে বকেয়ার দাবিতে অভিষেকের নেতৃত্বে দিল্লিতে গিয়ে ধুন্ধুমার বাধিয়েছিল তৃণমূল। কলকাতায় ফিরে এসে রাজভবনের সামনে টানা ধর্নাতেও বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি। তার পর সেই কর্মসূচি থেকেই অভিষেকের ঘোষণা ছিল, নভেম্বর থেকে ফের আন্দোলন শুরু হবে। কিন্তু নভেম্বরে সেই আন্দোলন হয়নি। দলশ্রুতি: তা নিয়ে অভিষেক খানিকটা ‘ক্ষুণ্ণ’ ছিলেন। সম্প্রতি তাঁর ‘গুটিয়ে থাকা’ নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতিতে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, তখনও শোনা গিয়েছিল, অভিষেকের অনেকগুলি ক্ষোভের মধ্যে একটি হল, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে তাঁর ‘আগ্রাসী আন্দোলন’ থামিয়ে দেওয়া। 

গত দু’বছর ধরেই তৃণমূল তথা রাজ্য সরকার বলে আসছে, ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। বাংলার শাসকদলের আরও অভিযোগ, কাজ করানোর পরেও ‘মনরেগা’র কাজের মজুরি আটকে রেখেছে দিল্লি। পাল্টা বিজেপির বক্তব্য, বাংলায় বিপুল কারচুপি হয়েছে। নবান্ন হিসাব না-দিলে কেন্দ্র নতুন করে টাকা দেবে কেন? তবে এখন আর বঞ্চনার অভিযোগ শুধু ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আটকে নেই। আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। মালদহের সভা থেকে মমতা জেলার নেতাদের বার্তা দেন, যাঁরা বঞ্চিত, তাঁদের নিয়ে কলকাতায় আসতে হবে ২ ফেব্রুয়ারি। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের ট্রেন, বাস ভাড়া করার দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে এ-ও বলে দিয়েছেন, এই কর্মসূচির জন্য চাঁদা তোলা যাবে না।

গত ২০ ডিসেম্বর সাংসদের নিয়ে মমতা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে। সঙ্গে ছিলেন অভিষেক-সহ আরও কয়েক জন তৃণমূল সাংসদ। সেখানে ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্র ও রাজ্যের অফিসারেরা বসে হিসেব ও বকেয়া নিয়ে আলোচনা করবেন। কিন্তু সেই বৈঠক হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত জট কাটেনি। বুধবার মমতা বলেন, ‘‘আমি এখনও মরে যাইনি। ১ তারিখের মধ্যে টাকা না দিলে ২ তারিখ থেকে ধর্না করব। তার পর দেখব কত ধানে কত চাল।’’

You might also like!