kolkata

1 year ago

Shahjahan Sheikh:সন্দেশখালি কাণ্ডে পুলিশকে ভর্ৎসনা প্রধান বিচারপতির,শেখ শাহজাহানকে কলকাতা হাইকোর্টে তলব

Calcutta High Court may ask Shah Jahan to surrender
Calcutta High Court may ask Shah Jahan to surrender

 

 দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ এবার শেখ শাহজাহানকে কলকাতা হাইকোর্টে তলবের ভাবনা প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ।তিনি বলেন, ‘‘এমন ব্যক্তিকে রক্ষা করা হচ্ছে কি না আমরা জানি না। তবে মনে হচ্ছে, হয় রাজ্য পুলিশ তাঁকে রক্ষা করছে, না হলে তিনি পুলিশের আওতার বাইরে চলে গিয়েছেন।’’

একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ‘পলাতক’ শাহজাহানকে তাঁরা এই মামলায় ইডি, সিবিআই, পুলিশে সামনে কলকাতা হাই কোর্টে এসে আত্মসমর্পণ করতেও বলতে পারেন। বিচারপতির কথায়, ‘‘এত দিন ধরে ওই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এত সমস্যা। শাহজাহান প্রকাশ্যে এসে তো বলতে পারেন এই সব অভিযোগ সঠিক নয়। কারও জমি নেওয়া হয়নি।’’

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এক সপ্তাহ আগেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়। তবে মঙ্গলবার সেই মামলা তিনি পাঠিয়ে দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই হয় মামলাটির শুনানি। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এক জন ব্যক্তি পুরো সমস্যার জন্য দায়ী। অথচ তিনি কিনা জনপ্রতিনিধি! মানুষ তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করেছেন। যেখানে জনগণের স্বার্থে ওই ব্যক্তির কাজ করা উচিত, সেখানে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, তিনি জনগণের ক্ষতিই করেছেন।’’

 শাহজাহান শুধু সন্দেশখালির তৃণমূলের সংগঠনের প্রধান নন, তিনি জেলা পরিষদের সদস্যও। শাহজাহান এবং তাঁর দুই সঙ্গী উত্তম হাজরা এবং শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে এলাকায় অত্যাচার চালানোর অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। শিবপ্রসাদ এবং উত্তমের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাহজাহানকেই সমস্যার মূল বলে মন্তব্য করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘‘মামলা দায়ের হয়েছে, অথচ রাজ্য পুলিশ তাঁকে (শাহজাহানকে) ধরতে পারছে না। তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ১৮ দিনের বেশি হয়ে গেল কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। এমন ব্যক্তিকে রক্ষা করা হচ্ছে কি না আমরা জানি না। কিন্তু তাঁকে সমর্থন করা উচিত নয় রাজ্যের।’’

মঙ্গলবার সন্দেশখালি নিয়ে হাই কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে শাহজাহানকে হাই কোর্টে তলব করার কথাও বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানকে আমরা এই কোর্টে আসতে বলতে পারি। ইডি, সিবিআই এবং পুলিশ সবাই থাকবে। স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় তাঁকে আমরা এখানে আত্মসমর্পণ করতে বলতে পারি। এত দিন ধরে ওই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এত সমস্যা। শাহজাহান প্রকাশ্যে এসে তো বলতে পারেন, এই সব অভিযোগ সঠিক নয়। কারও জমি নেওয়া হয়নি। তা না করে ওই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদি তিনি পালিয়ে বেড়ান, তবে স্বাভাবিক ভাবে সমস্যা আরও বাড়বে। তাঁর সমর্থকেরাই সমস্যা তৈরি করতে পারে।’’

 গত মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সিংহ রায়ের একক বেঞ্চ সন্দেশখালি নিয়ে স্বতঃ প্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে বলেছিল, ‘‘সন্দেশখালির দু’টি ঘটনায় শিহরিত। প্রথমত, আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, সেখানকার মহিলাদের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ধর্ষণ করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত এই মামলা নিচ্ছে।’’ ওই দিন শুনানি চলাকালীন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের থেকে বেআইনি ভাবে ৭০০ বিঘা জমি কেড়ে নেওয়ার কথাও বলেছিলেন বিচারপতি। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতিও জমি প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন।

প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতি বলছেন, ‘‘মানুষের কৃষিজমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই ব্যক্তি পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড। আর এখনও তিনি পলাতক।’’

সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়েও মঙ্গলবার সরকারকে কটাক্ষ করেছে হাই কোর্ট। সন্দেশখালির মানুষের প্রতি কিছুটা সহানুভূতির সুরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি করে শুধুমাত্র ওই এলাকায় উত্তেজনা বহাল রাখা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ দোকানে যেতে পারবেন না। দোকানদার দোকান খুলতে পারবে না। চায়ের দোকান খুলতে পারবে না।’’

তবে মঙ্গলবার সন্দেশখালি সংক্রান্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ পর্যবেক্ষণের কথা জানালেও কোনও নির্দেশ দেয়নি। আগামী সোমবার এই স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।


You might also like!