দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম ও ঘামের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে জল ও লবণ বেরিয়ে যায়, যার ফলে দেখা দেয় ক্লান্তি, হিটস্ট্রোক, হজমের সমস্যা, মাথা ঘোরা এমনকি জলশূন্যতা। এই সময় শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি প্রয়োজন এমন খাবার, যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখবে, হজমে সাহায্য করবে এবং ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখবে। গরমকালে টকজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লেবু, আমচুর, টক দই, টক ফল বা আচার—এগুলো গ্রীষ্মকালে খাওয়ার মতো আদর্শ খাবার।
∆ গ্রীষ্মকালে টক খাওয়ার উপকারিতা:
১. শরীর ঠান্ডা রাখে: টক জাতীয় খাবার যেমন আমচুর, লেবু, তেঁতুল, দই ইত্যাদিতে থাকে প্রাকৃতিক অ্যাসিড, যা শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। এতে গরমজনিত অস্বস্তি ও হাঁপিয়ে ওঠার সমস্যা কমে।
২. হজমে সহায়তা করে: গরমে অনেকেই বদহজম, গ্যাস ও অম্বলের সমস্যায় ভোগেন। টক জাতীয় খাবার হজমে সহায়ক এনজাইম নিঃসরণে সাহায্য করে, ফলে খাবার সহজে হজম হয়। লেবু ও তেঁতুলের জল খেলে অম্বল ও গ্যাস্ট্রিক কমে।
৩.জলশূন্যতা প্রতিরোধ করে: টক জাতীয় ফল বা পানীয় যেমন লেবুর শরবত বা তেঁতুলের জল ইলেক্ট্রোলাইটে সমৃদ্ধ। এগুলো পান করলে শরীরের জলের ঘাটতি পূরণ হয় ও ডিহাইড্রেশন রোধ হয়।
৪. ক্লান্তি দূর করে: টক ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গরমে শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
৫. ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখে: গরমে ঘামের মাধ্যমে যে ইলেক্ট্রোলাইট শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, তা পুনরায় ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে টক জাতীয় খাবারে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান।
৬. রুচি বৃদ্ধি করে: গরমে অনেকেরই খাওয়ার রুচি কমে যায়। টক স্বাদ জিভে জল আনে এবং খাওয়ার ইচ্ছা বাড়ায়। বিশেষ করে গরমের দুপুরে লেবুর রস, কাঁচা আমের চাটনি বা তেঁতুল জল খেলে ক্ষুধা বাড়ে।
৭. হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করে: গ্রীষ্মে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। টক জাতীয় পানীয় শরীর ঠাণ্ডা রাখে, ফলে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
৮.ত্বক সতেজ রাখে: লেবু ও অন্যান্য টক জাতীয় খাবার ভিটামিন সি-তে ভরপুর, যা ত্বককে ডিটক্সিফাই করে ও উজ্জ্বল রাখে। গরমে ঘাম ও ধুলোবালিতে ত্বক মলিন হয়ে পড়লেও টক জাতীয় খাবার খেলে তা সতেজ থাকে।
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভিটামিন সি-তে ভরপুর টক খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে গরমকালে ভাইরাল ইনফেকশন থেকেও সুরক্ষা পাওয়া যায়।
∆ টক খাবারের তালিকা: লেবুর শরবত (সাদা নুন বা বিট নুন দিয়ে);
কাঁচা আম দিয়ে তৈরি পান্না;
টক দই বা ঘোল;
টক ফল যেমন জামরুল, আমলকি;
আমচুর বা আমের আচার।
টক খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত টক খেলে পেট খারাপ বা অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই গরমে নিজেকে সুস্থ ও চাঙ্গা রাখতে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন টকজাতীয় কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার। তাতে শরীর থাকবে হাইড্রেটেড ও মন থাকবে ফুরফুরে।