দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: তীব্র গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী। কিন্তু এই দাবদাহে সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে পড়ছে শিশুরা। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক শিশু হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব শিশুদের বয়স পাঁচ বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি।কারণ তাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলনামূলক অনেক কম। শিশুদের শরীরের ওজনের অনুপাতে ত্বকের উপরিভাগ বেশি হওয়ায় দ্রুত জল বাষ্পীভূত হয়।এ বিষয়ে অভিভাবকদের পরামর্শ দিতে গিয়ে দিল্লির এইমস (AIIMS)-এর নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডাঃ রমেশ আগরওয়াল জানান, সদ্যোজাত শিশুদের সবসময় নরম কাপড়ে মুড়িয়ে রাখার একটি ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেক বাবা-মা গরমেও শিশুদের নরম কম্বলে মুড়ে রাখেন। এর ফলে শিশুর শরীর থেকে তাপ বের হতে পারে না। ফলে দেহের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায়, যা হিট স্ট্রোকের অন্যতম কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।
শিশুদের সুস্থ রাখতে কিছু মৌলিক বিষয় মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি:
১)শিশুকে পর্যাপ্ত জল ও তরল খাবার দিন;
২)রোদে বাইরে শিশুকে নিয়ে বেরবেননা, বিশেষত দুপুর ১২টা থেকে ৪টার মধ্যে;
৩)হালকা রঙের সুতির জামা পরান;
৪)ঘর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন, ভেজা তোয়ালে ব্যবহার করুন;
৫)দিনের বেলায় ঘরের সমস্ত পর্দা দিয়ে রাখুন;
৬)শিশুকে কোনওভাবেই অতিরিক্ত গরমে পোশাক পরাবেননা;
৭)শিশু যদি ক্লান্ত বা বমি ভাব প্রকাশ করে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন;
৮)ছ’মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করান।
মধুকার রেইনবো চিলড্রেনস হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের পরিচালক ডাঃ নীতীন বলেন, “প্রাপ্তবয়স্কদের শরীর থেকে ৫০০ মিলি জল বিয়োগ ঘটলে তা সামলানো তাদের পক্ষে সহজ। কিন্তু একটি ছোট শিশু যার ওজন ১২ কেজি, তার শরীর থেকে ২৫০ মিলি জল বেরিয়ে গেলে তা যথেষ্ট বিপজ্জনক অবস্থায় পর্যবসিত হবে।”একেবারে ছোট শিশুরা অনেক সময় তৃষ্ণা অনুভব করলেও তা মুখ ফুটে বলতে পারে না, তাই অভিভাবকদেরই তাদের জল পানের বিষয়ে সর্বদা নজর দিতে হবে। শুধু জল নয়, শিশুদের ডাবের জল, লেবুর শিকঞ্জি, ঘোল, লস্যি এবং টাটকা ফলের রস দিন। চিনিযুক্ত ঠান্ডা পানীয় সর্বদা এড়িয়ে চলুন। কারণ এতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে যা উলটে তৃষ্ণা বাড়াতে পারে। ডাঃ বর্মার মতে, ২ বছরের কম বয়সি শিশুদের দিনে প্রায় ১ লিটার জল পান করা উচিত। ২ বছরের অধিক বয়েসের বড় শিশুদের ক্ষেত্রে ২ লিটার বা তার বেশি জল পান করা উচিত। যারা খেলাধুলোয় অংশ নেয় তাদের আরও বেশি জল পান করা উচিত। এই তীব্র গরমে শিশুদের প্রতি অতিরিক্ত যত্ন নেওয়াই একমাত্র উপায়। গাফিলতি হলে বড় বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়, সতর্ক থাকুন।