দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সাইনাস একটি পরিচিত ও সাধারণ সমস্যা হলেও, এর উপসর্গ অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনে চরম অস্বস্তি তৈরি করে। অনেকের ধারণা, সাইনাসের সমস্যা শুধু শীতকালের ব্যাপার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে—গ্রীষ্মকালেও সাইনাসজনিত সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, গরমকালে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে ঘাম, ধুলোবালি, বাতাসে উড়তে থাকা অ্যালার্জেন ও হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের কারণে সাইনাসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। ফলে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা, চোখের চারপাশে চাপ অনুভূত হওয়া, শ্বাসকষ্ট কিংবা গলা জ্বালা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই আজকের প্রতিবেদনে উল্লেখিত হল গরমকালে সাইনাসের সমস্যা কমাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
সাইনাসের রোগীরা গরমকালে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন:
১। পরিষ্কার ও ধুলোবালিমুক্ত পরিবেশে থাকা – গরমকালে বাতাসে ধুলো ও পরাগ কণার পরিমাণ বেশি থাকে। যা সাইনাসের সমস্যা বাড়াতে পারে। বাইরে বের হলে মাস্ক পরুন এবং ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন। এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন।
২। হাইড্রেটেড থাকা – গরমে ঘাম বেশি হয়, ফলে শরীর দ্রুত জলশূন্য হয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত জল পান না করলে সাইনাস ক্যাভিটিতে জমে থাকা শ্লেষ্মা পাতলা হয় ও সহজে বের হয়ে আসে। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস জল পান করা ভাল।
৩। নাক ধোয়ার অভ্যাস – প্রতিদিন নাক পরিষ্কার রাখার জন্য নরমাল স্যালাইন ওয়াটার দিয়ে নাক ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি সাইনাসের চাপ কমায় এবং অ্যালার্জেন বা জীবাণু দূর করে।
৪। ঠান্ডা থেকে সাবধান – গরমে অনেকে ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম বেশি খেয়ে থাকেন। যা সাইনাসের প্রদাহ বাড়াতে পারে। তেমনি, হঠাৎ এসি বা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
৫। সঠিক ঘুম ও বিশ্রাম – গরমে ঘুম ব্যাঘাত হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, যা সাইনাসের সমস্যা বাড়াতে পারে। নিয়মিত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
৬। পর্যাপ্ত জল পান করুন – গরমে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়। এতে সাইনাস ক্যাভিটি আরও শুকিয়ে যেতে পারে এবং ইনফেকশন বা ইনফ্ল্যামেশন বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে দিনে অন্তত ২.৫-৩ লিটার জল পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৭। হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন – এসি ঘরে থাকা বা অতিরিক্ত শুকনো বাতাসও সাইনাসের সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন, যা বাতাসে আর্দ্রতা বজায় রাখবে।
৮। স্টিম ইনহেলেশন (গরম জলের ভাপ) – রোজ সকালে ও রাতে একবার করে গরম জলের ভাপ নিন। এতে নাকের জ্যাম কমে এবং মিউকাস সহজে বের হয়ে যায়।
৯। সুষম খাদ্য এবং ঘুম – ইমিউন সিস্টেম ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার খান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। কারণ, দুর্বল শরীরেই বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে সাইনাসের উপসর্গ।
যদি সাইনাসের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, ঘন ঘন জ্বর আসে, চোখ ফুলে যায় বা ঘন হলুদ রঙের মিউকাস নির্গত হয়, তবে দেরি না করে একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি কিছু সাধারণ অভ্যাস ও প্রতিদিনের যত্নই আপনাকে অনেকটাই স্বস্তি দিতে পারে। তাই, আগে থেকেই সতর্ক থাকুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।