দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রযুক্তি দুনিয়ায় এক নতুন চমক। এআই-চালিত সার্চ ইঞ্জিন স্টার্টআপ পারপ্লেক্সিটি এআই গুগল ক্রোম অধিগ্রহণের জন্য অবিশ্বাস্য ৩৪.৫ বিলিয়ন ডলারের বিড করেছে। মজার বিষয়, এই স্টার্টআপ সংস্থার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার হলেও, তাদের বিনিয়োগকারীদের একাংশ এই বিপুল অর্থে গুগল ক্রোম কেনার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। ২০২২ সালে অরবিন্দ শ্রীনিবাস ও কয়েকজন সহ-প্রতিষ্ঠাতার হাত ধরে যাত্রা শুরু করে পারপ্লেক্সিটি এআই। প্রচলিত সার্চ ইঞ্জিনের মতো কেবল লিঙ্কের তালিকা না দিয়ে সরাসরি ওয়েব থেকে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে উত্তর দেওয়াই এর বিশেষত্ব। সম্প্রতি সংস্থাটি নিজস্ব ব্রাউজার "কমেট" চালু করেছে, যা ক্রোম অধিগ্রহণের আগ্রহের পেছনে কৌশলগত কারণ হতে পারে।
এই সাহসী প্রস্তাবের পটভূমিতে রয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগের (DOJ) সাম্প্রতিক অবস্থান। গত বছর কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক অজয় মেহতা গুগলের বিরুদ্ধে "একচেটিয়া ব্যবসার" গুরুতর অভিযোগে যুগান্তকারী রায় দেন। রায়ে বলা হয়, গুগল ইন্টারনেট অনুসন্ধানে অবৈধভাবে একচেটিয়া অধিকার বজায় রেখেছে, যা প্রতিযোগিতার পথে বড় বাধা। DOJ প্রস্তাব দেয়, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গুগলকে ক্রোম বিক্রি করে দিতে হবে, যাতে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনও ব্রাউজার অ্যাক্সেস পায়।
২০০৮ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে গুগল ক্রোম শুধু একটি ওয়েব ব্রাউজার নয়, বরং সার্চ জায়ান্টের জন্য বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারকারীর তথ্যের উৎসে পরিণত হয়েছে। DOJ যুক্তি দিয়েছে, ক্রোম বিক্রি হলে সার্চ বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং গুগলের "স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ" ভাঙবে। তবে গুগল এই রায়কে "উগ্র হস্তক্ষেপবাদী" আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেছে এবং জানিয়েছে, এই প্রস্তাব অতি বিস্তৃত। সংস্থাটি এখনও জানায়নি, আদালতের রায়ের পর তারা ব্যবসার কাঠামোয় কী পরিবর্তন আনবে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, যদি DOJ-এর চাপ অব্যাহত থাকে এবং গুগল ক্রোম বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়, তবে পারপ্লেক্সিটির এই উচ্চ বিড বড় ধরনের বাজার পালাবদলের সূচনা করতে পারে। যদিও, ১৮ বিলিয়ন ডলারের মূল্যায়ন নিয়ে থাকা একটি স্টার্টআপের পক্ষে ৩৪.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাস্তবায়ন করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।