দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ওড়িশার পুরীতে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও পূজিত তীর্থস্থান জগন্নাথ মন্দিরকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য। মন্দিরের অদূরের একটি দেওয়ালে ওড়িয়া এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই লেখা হয়েছে — জঙ্গি হামলায় ধ্বংস হবে জগন্নাথদেবের এই মন্দির। সঙ্গে রয়েছে একাধিক ফোন নম্বর এবং স্থানীয়দের উদ্দেশে সেই নম্বরে যোগাযোগের বার্তা। এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা, প্রশ্ন তুলছেন— এত কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও এমন হুমকি বার্তা এল কীভাবে? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুমকি বার্তা ছাড়াও আশেপাশের এলাকায় একাধিক লাইট ও লাইটপোস্ট ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কিছু দেওয়ালেও রয়েছে ক্ষতির চিহ্ন। অথচ জগন্নাথ মন্দির ও তার চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারিতে থাকার কথা এবং নিয়মিত টহল দেন নিরাপত্তা কর্মীরা। তবুও কীভাবে এই দেওয়াল লিখন, ভাঙচুর ও নাশকতার ইঙ্গিতপূর্ণ ঘটনা ঘটল, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
শুধু এই ঘটনা নয়, গত কয়েক মাসে মন্দিরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার একাধিক ত্রুটি প্রকাশ্যে এসেছে। কিছুদিন আগে মন্দিরের পতাকা ঈগলের দ্বারা ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়া, রথযাত্রার সময় চূড়ান্ত অব্যবস্থা, একাধিকবার পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হওয়া, এমনকি রথ সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে না পারা— সব ক্ষেত্রেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেবায়েতদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, জগন্নাথ মন্দিরের মতো ‘হাই সিকিউরিটি জোন’-এ নিরাপত্তা এতটা ঢিলেঢালা কেন? এদিকে, ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা দেওয়ালে এই হুমকি বার্তা লিখল এবং আশেপাশে ভাঙচুর করল, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের দাবি— শুধু তদন্ত নয়, জগন্নাথ মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা এবং নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক স্থানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাবে।