দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ'পাকিস্তানে কম স্বৈরতন্ত্র আছে? গতবছর সেখানে নির্বাচন হয়েছে। যে পার্টি বেশী সিট পেয়েছে, সে পার্টি নেতা ইমরান খান আজ জেলে। সরকারে যারা বসে আছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা তারা পায়নি। কোন ইসলামিক দেশে গনতন্ত্র সফল হয় না। সেটা বাংলাদেশের ঘটনা আবারও প্রমান করল। এক দিদি (শেখ হাসিনা) গেছেন। আর এক দিদি সেই পথে হাঁটছেন। তাদের ভবিষ্যতটা তৃণমূল যেন দেখে রাখে, পশ্চিমবঙ্গটাকে কেনদিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই আগুনে কেউ বাঁচবে না।' দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরে প্রাতঃভ্রমনে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই খোঁচা দিয়ে আক্রমণ করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন থেকে উত্তাল পরিস্থিতি সারা বিশ্বে নজর কেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্থফা দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়া হয়েছেন। সেখানের গনভবন লুট হয়েছে। বাংলাদের অওয়ামী লিগ নেতা থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে। হিন্দু মা- বোনেদের সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। হাজার হাজার হিন্দু এদেশে আসার জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছে। অনেকে ভিসা নিয়ে দেশ ছেড়েছে। আর ওই উত্তাপ এপার বাংলা পশ্চিমবঙ্গেও আ়ঁচ পড়তে শুরু করেছে। লোকসভা নির্বাচনের পর আবার স্বমহিমায় বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার দলীয় কর্মসূচীতে দুর্গাপুরে এসেছিন তিনি। দুর্গাপুর পুরসভার ৩৭ নং ওয়ার্ডে প্রাতঃভ্রমনে যান তিনি। সেখানে চা-চক্র সারেন। ওইসময় শহরের ৩৭ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার স্বরুপ মন্ডল সৌজন্য হাত মেলান।
তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তানের পরিস্থিতিকে স্মরণ করিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দেন তিনি। এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন," পড়শি দেশে গন্ডগোল হলে চিন্তা থাকে। কারন ইতিহাস বলছে, সেখানের হিন্দুরা অত্যাচারিত হয়। আর তারপর ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে আসে।" তিনি বলেন," আবারও সেই ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তাদের হয়ে কেউ বলছে না। কেউ জামাতিদের কথা বলছে। কেউ স্বৈরতান্ত্রীদের কথা বলছে। এসব যারা করছে সমাজবিরোধী, স্বৈরতান্ত্রী তারা কারও নয়। না, হলে গনভবন দেশের সম্পদ, লুট করে? প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লুট করে? এধরনের লোকেরাই ওখান থেকে ঢুকছে এরাজ্যে। গত ২০২১ সালে নির্বাচন পরবর্তী বিজেপিকর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর, লুট করেছিল। মহিলাদের সম্মানহানি করেছিল।" তিনি আরও বলেন," এরাই এখন তৃণমূল কংগ্রেসটাকে দখল করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো ভাবছেন, এরাতো আমার পক্ষে আছে, তাই মুখ বন্ধ করে আছেন। হিন্দুদের হয়ে কথা বলছেন না।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তিনি বলেন," উনি জানে না, বাঘের পিঠে চেপে আছেন। পিঠ থেকে যখনই নামবেন, ওই বাঘ আগে ঘাড় মটকাবে। একদিদি (সেখ হাসিনা) গেছেন। আর একদিদি ওই পথেই হাঁটছেন। তাদের ভবিষ্যতটা যেন তৃণমূল দেখে রাখে। পশ্চিমবঙ্গকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই আগুনে কেউ বাঁচবে না।" এদিন তিনি পাকিস্তানের স্বৈরতান্ত্রীক পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে বলেন," পাকিস্তানে স্বৈরতন্ত্র কম আছে? গতবছর সেখানে নির্বাচন হয়েছে। যে পার্টি বেশী সিট পেয়েছে, সে পার্টির নেতা ইমরান খান আজ জেলে। সরকারে যারা বসে আছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কোন ইসলামিক দেশে গনতন্ত্র সফল হয় না। সেটা আবারও প্রমান করল বাংলাদেশের ঘটনা।" তিনি বলেন," বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অধীনে রাখতে চেয়েছিল। যারা পঞ্চমবাহিনী, রাজকারের কাজ করেছিল। পাকিস্তানের দালালি করেছিল। চিন আর পাকিস্তানের সহযোগিতা নিয়ে সেলোকগুলোই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা বাংলাদেশ ও আমাদের পক্ষেে খারাপ।" তিনি চিনকে নিশানা করে আরও বলেন," যারা দাদাগিরি করেন, বাংলাদেশে নিজের পা শক্ত করার চেষ্টা করেছিল বড় বড় দেশ। বাংলাদেশটাকে লুট করার চেষ্টা করেছিল, তাদের কিছু যাবে আসবে না। কিন্তু ২০-২২ কোটি বাঙালির ভবিষ্যত অন্ধকার।" হাসিনার প্রসংশা করে তিনি বলেন," আর যাই হোক হাসিনা বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা নিয়ে সাধারন মানুষের জীবন উন্নত করেছিলেন। কিন্তু কিছু কট্টরপন্থী, অন্ধবিশ্বাসী লোক সেটা চায় না। তারা কারও কারও হয়ে কাজ করছে। সেটা বাংলাদেশের পক্ষে সংকটজনক ।"