দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার ফোর্ট উইলিয়ামে শুরু হওয়া তিনদিনব্যাপী সেনা সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে উচ্চপদস্থ সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় কাটান তিনি সম্মেলনে। বক্তব্য ও বৈঠক শেষে দুপুর ২ টোর দিকে আকাশপথে কলকাতা থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এই সম্মেলনে সীমান্ত পরিস্থিতি, প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং যৌথ বাহিনীর ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
সেনা সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার রাতেই কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কোনও কর্মসূচি না থাকলেও মোদিকে দেখতে ভিড় ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ সারেন মোদি। সেখান থেকে তাঁর ২৪ গাড়ির কনভয় পৌঁছয় রাজভবনে। সেখানেই রাত্রিবাস করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজনাথ সিংও। তিনি রাত কাটান ফোর্ট উইলিয়ামে।
সোমবার সকালে ফোর্ট উইলিয়ামে তিনদিন ব্যাপী সেনা সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং, সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ) জেনারেল অনিল চৌহান-সহ বাহিনীর তিন প্রধান-সহ শীর্ষকর্তারা। সূত্রের খবর, এই সম্মেলনে আগামী দু’বছরের সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাহিনীর সংস্কার, রূপান্তর ও পরিবর্তন নিয়ে কথা হয়েছে বলেই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিজয় দুর্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। একদিকে অশান্ত বাংলাদেশ, অন্যদিকে উত্তেজনাপূর্ণ চিন সীমান্ত—তার উপর নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদল; সব মিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক জটিল ও সংবেদনশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এমন খবরও সামনে আসে যে, বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে চিন, যা আবার ভারতের 'চিকেনস নেক' এর আশেপাশেই গড়ে তোলা হবে বলে আশঙ্কা। এই ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে ‘তিন ফ্রন্টে’ (চিন, বাংলাদেশ ও নেপাল) সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর কৌশল, প্রস্তুতি এবং পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের উপস্থিতি এই বৈঠককে আরও তাৎপর্যপূর্ণ এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।