কলকাতা, ২১ জানুয়ারি : দেশ জুড়েই রামমন্দিরকে ঘিরে আবেগ ক্রমেই চড়ছে। সূত্রের খবর, সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভগবান রামের পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। এমনকী একদল পড়ুয়া অযোধ্য়ায় যে অনুষ্ঠান হবে সেই অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করছেন। যা নিয়ে সরব হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন । তবে এই এবিষয়ে বামেদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্য হালদার।
রাত পোহালেই অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন ও মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে । রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে দেশ জুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে সোমবার । আগামীকাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভগবান রামের পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। এমনকী অযোধ্য়ার অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করছেন একদল পড়ুয়া। চার নম্বর গেটের কাছে পার্কিং লটের কাছে এই রামপুজোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে একটি পোস্টার ঘুরছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে যদিও উদ্য়োক্তা হিসাবে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের নাম নেই। আয়োজক হিসাবে লেখা রয়েছে ‘জেইউ স্টুডেন্ট’। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে তাঁরা এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
এসএফআই নেত্রী আফরিন বলছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ মনোভাবের পড়ুয়ারা বেশি। একজন ছাত্রের উদ্যোগে এই স্ক্রিনিং হওয়ার কথা। ধর্মীয় উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এটা যাদবপুরের সংস্কৃতি নয়। বিভাজনমূলক রাজনীতি যাদবপুরে চলবে না। আমরা যতটুকু জানি, কর্তৃপক্ষও এর অনুমতি দেয়নি। ছাত্রছাত্রীরা বয়কট করবে। এসএফআই বিকল্প সংস্কৃতির পরিচয় দেবে ওইদিন।
খানিক এসএফআইয়ের সুরেই কথা বলছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্য হালদার। তবে প্রশ্ন তুলেছেন বামেদের ভূমিকা নিয়েও। স্পষ্ট বলছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশিলতার কথা বলে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটি ধর্মনিরপেক্ষ ক্যাম্পাস। সেখানে ধর্মীয় উস্কানির কোনও স্থান নেই। এই স্ক্রিনিংটা হওয়া উচিত নয়। আমার প্রশ্ন, বাম ছাত্র সংগঠনগুলি এত উদাসীন কেন? সব বিষয়ে যারা আন্দোলন করে, তারা এখন রাস্তায় কোথায়?
যদিও এবিভিপি নেতা দেবাঞ্জন পাল বলছেন, যাদবপুরে র্যাগিং করা কিছু ছাত্রছাত্রী রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার স্ক্রিনিং আটকাতে চাইছে। রাম মন্দির শুধু হিন্দু নয়, গোটা দেশের আবেগ। সবাই রাম মন্দিরের জয়গান করছে। সেখানে র্যাগিং করা যাদবপুরের কয়েকজন কম বয়সী ছেলে স্ক্রিনিং আটকাতে পারবে না।
কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায় ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কর্তৃপক্ষকে দেওয়া আবেদনে লেখা হয়েছে, ‘দেশপ্রেমের আদর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার আদর্শকেই বহন করছে। আমরা চাই এমন কোনও ঘটনা যাতে ক্যাম্পাসে সেদিন না ঘটে যা শান্তি-সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের পরিবেশ বিঘ্নিত করে।’