দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ গত শনিবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের কামারপুকুরে সভা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইস্কনের 'রাজনৈতিক' ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, মমতার বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা হয়েছে! সোমবার পঞ্চম দফার ভোটের দিন বাংলায় প্রচারে এসে এই বিষয়ের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
রামকৃষ্ণ মিশনের জলপাইগুড়ি শাখায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দাবি করা হয়েছে, শনিবার গভীর রাতে ৩০ থেকে ৩৫ জন লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন মিশনের ভিতর। লোকজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। সিসিটিভি নষ্ট করে। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণেই এই ঘটনা। দলীয় নেতা অমিত মালব্য তো সরাসরি এই ঘটনাকে 'তালিবানি' হামলা বলে আক্রমণ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতা লেখেন, ''এটাই হয়তো বাংলায় সবথেকে নিকৃষ্টতম কাজ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও ইসকনকে খোলা মঞ্চ থেকে হুমকি দেওয়ার পরে দুষ্কৃতীরা বন্দুক, ছুরি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রমে প্রবেশ করেছিল। তারা সাধুদের উপর হামলা চালায়। এটা তালিবানি জমানার থেকে কম কিছু নয়।''
শিলিগুড়ির সেবক রোডের চার মাইলে প্রায় দুই একর জমির উপর রয়েছে এই মঠ। সেবক হাউজ নামেই এর পরিচিতি। এটি জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের অধীন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক ব্যক্তি এই জমি দান করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনকে। পরবর্তীতে সেই জমির মালিকানা নিয়ে মামলা হলেও আদালতের রায় গিয়েছে মিশনের পক্ষেই। সম্প্রতি এখানে একটি স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করেছে মিশন। কিন্তু কয়েক কোটি টাকা দামের ওই জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এলাকার জমি মাফিয়ারা। শনিবার গভীর রাতে তারাই সেবক হাউজে হামলা চালায়।
এই ইস্যুতে সোমবারের ঝাড়গ্রামের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য ছিল, হিন্দু সন্তদের হুমকি দিচ্ছে খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলেই তৃণমূলের গুন্ডাদের সাহস বেড়ে গিয়েছে। মোদীর কথায়, ''রামকষ্ণ মিশন, ইসকন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয়। আমার জীবনেও রামকৃষ্ণ মিশনের অত্যন্ত বড় ভূমিকা আছে। বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে এইভাবে হুমকি দেওয়া হবে, ভাবতে পারে না দেশবাসী।'' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছিলেন তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন কার্তিক মহারাজও।
কার্তিকের বিরুদ্ধেই সুর চড়িয়ে মমতা দাবি করেছিলেন, তিনি ভোটের সময়ে তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেননি। মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার হোতাও তিনি! তবে কার্তিকের দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের তাঁবেদারি করেন না। এমন অভিযোগ করার আগে প্রমাণ দিতে হবে। এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতেও বলেছেন তিনি। নাহলে আইনি পথে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।