গুয়াহাটি, ১৮ অক্টোবর : আধ্যাত্মিক জনবিশ্বাস এবং জাতীয় সংস্কৃতি ঐতিহ্য পরম্পরা রক্ষা করে আজ মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘কাতি বিহু’ বা কার্তিক সংক্রান্তি। আশ্বিন এবং কার্তিক মাসের সংক্ৰান্তির দিন পালিত হয় কৃষিভিত্তিক উৎসব কাতি বিহু৷
প্ৰাচীনকাল থেকে আশ্বিন মাসের শেষ দিন অসমিয়া সমাজ এই দিনকে আলোকের উৎসব হিসেবে পালন করে আসছে। বরাবরের মতো এবারও প্ৰত্যেক অসমবাসীর বাড়ির দাওয়ায় তুলসীর চারা রোপণ করে সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে ধনের দেবী মহালক্ষ্মীকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা জানাবেন।
সে হিসেবে আজ সকালে বাড়ির গৃহস্থ-গৃহিণীরা শুদ্ধাচারে স্নানাদি শেষে, শুদ্ধবস্ত্র পরিধান করেন। এর পরে তাঁরা তুলসীর চারা রোপণ করে সন্ধ্যার প্রস্তুতিতে মাতোয়ারা হয়েছেন। যাঁদের কৃষিক্ষেত আছে তাঁরা তাঁদের ক্ষেতের মধ্যবর্তী এক এলাকা পরিষ্কার করে সেখানে বেদী তৈরি করে তুলসীর চারা রোপণ করেছেন। সোনালি মাঠে এবং বাড়িতে তুলসী তলায় পান-সুপারি, নারিকেল, পিঠেপুলির নৈবেদ্য সহকারে প্রদীপ প্রজ্বলন করে লক্ষ্মীকে বরণ করতে প্ৰতিবছরের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। সর্বত্র সন্ধেবেলার ব্যস্ততা।
সোনালি মাঠে লক্ষ্মীকে বরণ করতে প্ৰতিবছর অসমে পালিত হয় কাতিবিহু। অসমে তিনটি বিহুর অন্যতম কাতি বিহু। ক্ষেতে তোলা হয় আকাশবাতি। এই দিনকে অসমিয়ারা কঙালি বিহুও বলেন। এর মাধ্যমে কৃষিজীবী অসমিয়ারা লক্ষ্মীকে ঘরে তুলেন। তিন বিহুর অন্যতম কাতি বিহুতে রঙালি বিহুর মতো রং অথবা ভোগালি বিহুর মতো পিঠেপুলি খাবার-দাবারের প্ৰাচুৰ্য বিশেষ থাকে না। এ সময় কৃষিজীবীরা তাঁদের ধানের গোলা উন্মুক্ত করে দেন লক্ষ্মীকে স্বাগত জানাতে।
মোদ্দা কথায়, কৃষিভিত্তিক এই উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে রাজ্যের শস্য-শ্যামলা খেতগুলি সোনায় ভরপুর হয়ে রাজ্যের কৃষককুলের মধ্যে নতুন আশা ও উদ্যম বাড়াতে সহায়তা করে বলে লোকবিশ্বাস। এছাড়া প্রচলিত নিয়মে কাতি বিহু উদযাপিত করতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের নামঘরে নামকীর্তনের আয়োজন করা হয়েছে।