West Bengal

6 hours ago

TMC Councillor Partha Sarathi Maiti:‘ভুল করেছি’, বলেই কান ধরে ওঠবস তৃণমূল কাউন্সিলরের, দেখে চমকে গেলেন উপস্থিতরা

TMC Councillor Partha Sarathi Maiti
TMC Councillor Partha Sarathi Maiti

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর ও পেশায় আইনজীবী পার্থসারথি মাইতি প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করে মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। তাঁর দাবি, জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ নিয়োগ দুর্নীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত, এমনকি বিরোধী দলনেতারও নাম রয়েছে এই অভিযোগে। কিন্তু সব জেনেও দলের উচ্চ নেতৃত্ব নীরব থেকেছে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে লজ্জিত হয়ে তিনি দলের হয়ে ক্ষমা চাইলেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার ভিডিয়োও প্রকাশ করেছেন তিনি।

তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থের পোস্ট করা ওই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল )। পার্থের দাবি, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগে পূর্ব মেদিনীপুরের একঝাঁক তৃণমূল নেতা জড়িত। কিন্তু তাঁরা মুখ না খোলায় পার পেয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে থাকা মূলচক্রী! তাই নিজের দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের হয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান ধরে ওঠবস করেছেন তিনি।

ভিডিয়োয় শোনা গিয়েছে পার্থসারথি মাইতিকে বলতে, “আমাদের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কিছু নেতা টাকা নিয়েও মুখ খুলছেন না। আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবু আজ এত বড় বড় কথা বলছেন, তার প্রধান কারণ আমাদের নেতৃত্বের নীরবতা। তাঁদের নীরব থাকার দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি এবং সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের হয়ে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

দাগি অযোগ্য শিক্ষকদের নামের তালিকা সদ্য প্রকাশ করেছে এসএসসি। আর সেই তালিকাতেই উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের একঝাঁক অযোগ্যের নাম। এ নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা জুড়ে। অভিযোগ, শাসক দলের বহু নেতাকর্মী, তাঁদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নাম এই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে। পার্থের দাবি, ২০১৬ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের একচ্ছত্র নেতা যিনি ছিলেন, তাঁর হাত ধরেই এই অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। অথচ জেলা জুড়ে এই বিপুল সংখ্যক ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’কে সব জানা সত্ত্বেও আড়াল করছে তৃণমূলেরই একাংশ।

ভিডিয়ো ‘ভাইরাল’ হওয়ার পর কী বলছেন পার্থ? কাউন্সিলরের কথায়, “আমি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আন্দোলনের জেলা, স্বাধীনতার জেলা। কিন্তু এই জেলার মানুষ হয়েও আজ আমরা দুঃখিত। কারণ, শুভেন্দুর মতো একজন মহাচোর আমাদের কিছু স্বার্থান্বেষী নেতার মদতে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লজ্জার বিষয় হল, এই জেলার সমস্ত তৃণমূল নেতৃত্বই জানেন কে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। কিন্তু মূল চোরের নাম কিছুতেই সামনে আনা হচ্ছে না।” পার্থের মতে, দলেরই একাংশ এই কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন নিজেদের গদি বাঁচাতে তাঁরা সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দুকে আড়াল করছেন।শুভেন্দু আগেই জানিয়েছেন তাঁর কোনও আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম দাগি অযোগ্যদের তালিকায় নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কেউ যদি এ ধরনের অভিযোগ করে থাকেন তা হলে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” তমলুক পুরসভার শবরী চক্রবর্তীও বলছেন, “১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ মাইতির কথায় তাঁর দলের নেতৃত্বই গুরুত্ব দেন না। সেই ব্যক্তি নিজেকে প্রচারের কেন্দ্রে আনার জন্য উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। এ সব কথায় আমরা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’

অন্য দিকে, তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত রায় বলেন, “এই জেলায় কি এখনও শুভেন্দু দল চালাচ্ছেন? উনি একজন আইনজীবী হয়েও কী ভাবে এই সব বেআইনি কথা বলছেন? দলের হয়ে লড়াইয়ের নামে তিনি আসলে তৃণমূলকেই ছোট করছেন।’’

You might also like!