দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির রোষ সামলাতে রাজনৈতিক সম্পর্কের সীমারেখা পেরিয়ে মানবিকতার নজির গড়ল ভারত। জম্মুর তাওয়ি নদীতে প্রবল বর্ষণে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিতি ঘিরে পাকিস্তানকে আগেভাগেই সতর্ক করল নয়াদিল্লি। ফলে সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে।
প্রচণ্ড বর্ষণের জেরে জম্মুর তাওয়ি নদীতে জলস্তর হঠাৎই বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গিয়ে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। নদীর দুকূল ছাপিয়ে বয়ে যাওয়া জল এখন বিপদমূখী হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের জন্যও। এমন আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই নয়াদিল্লি থেকে ইসলামাবাদকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত দুই দেশের পক্ষ থেকেই কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, তাওয়ি নদীতে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিবার ইসলামাবাদে এই সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন । মে মাসে ভারত-পাক তীব্র সংঘাতের পর এই প্রথম পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করল ভারত সরকার। জানা যাচ্ছে, ভারতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান সরকারও সতর্কতা জারি করেছে। পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের তরফে জারি হয়েছে হাইঅ্যালার্ট। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জুন ২৬ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত মৌসুমী বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই প্রতিবেশী দেশে ৭৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ হাজার ১৮ জন আহত হয়েছেন। ভারতীয় হাই কমিশনের এই সতর্কতার জেরে বহু অসহায় পাকিস্তানী নাগরিককে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয় ভারত। সেই সময় একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত ছিল ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি কার্যত স্থগিত করা। বিশ্বব্যাঙ্কের তত্ত্বাবধানে স্বাক্ষরিত এই ঐতিহাসিক চুক্তি এতদিন ধরে সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলির জলবণ্টন ও ব্যবহার নির্ধারণ করে আসছিল। এদিকে, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে টানা ভারী বর্ষণের কারণে নদীগুলির জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছেছে। ফলে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।