kolkata

5 hours ago

SSC Tainted candidates:হাই কোর্টে চরম ভর্ৎসনা, ‘দাগি’দের করা মামলা বাতিল: কেন এতদিন নীরব ছিলেন?

Calcutta HC Rejects Plea of Tainted SSC Candidates
Calcutta HC Rejects Plea of Tainted SSC Candidates

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় ‘দাগি অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের ভর্ৎসনা করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত তাদের মামলা খারিজ করে দিয়েছে এবং এসএসসির প্রকাশিত ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকায় কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই মামলাটি তালিকায় হস্তক্ষেপ করার জন্য উপযুক্ত নয়। ফলে, পরীক্ষায় বসার সুযোগ এই ‘দাগি’ মামলাকারীদের নেই।

মামলাকারী ‘দাগি অযোগ্যে’রা এত দিন তাঁরা কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। হাই কোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, “এত দিন কোথায় ছিলেন? যেই তালিকা প্রকাশ হল, আদালতে চলে এলেন।” বিচারপতি আরও বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে আর নয়! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে তালিকা প্রকাশের পরে কী ভাবে বলতে পারেন দাগি অযোগ্য নন?”

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো গত সপ্তাহেই ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। ওই তালিকায় ১৮০৬ জনের নাম রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, আগামী ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর এসএসসি-র যে নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে, তাতে বসতে পারবেন না ‘দাগি অযোগ্যে’রা। তবে কমিশন তালিকা প্রকাশের পরে ওই তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ‘দাগি অযোগ্যে’রা। তাঁদের যাতে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার হয়, সেই আবেদনও জানিয়েছেন মামলাকারীরা। মামলাকারীদের বক্তব্য, তাঁরা যে ‘দাগি’, তা কে ঠিক করে দিল? কিসের ভিত্তিতে তাঁদের ‘দাগি’ বলা হচ্ছে?

মঙ্গলবার হাই কোর্টে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে মামলাকারীদের ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। মামলাকারীদের কাছে তিনি জানতে চান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে গিয়েছিলেন কি না। বিচারপতির প্রশ্ন, যদি তাঁরা স্কুলে না গিয়ে থাকেন, তবে আগেই কেন আদালতে আসেননি? বিচারপতি ভট্টাচার্য বলেন, “গত ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে আপনারা স্কুলে যেতে পারেননি। এখন কেন আবেদন করেছেন?”

‘দাগি অযোগ্য’দের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ি এবং আইনজীবী শাক্য সেন। তাঁরা সওয়াল করেন, হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ দাগি অযোগ্যর যে সব শর্ত বলেছে, তা এই প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অনিন্দ্যের বক্তব্য, সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেলে, প্যানেল বহির্ভূত ভাবে যাঁরা চাকরি পেলে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেলে— এই তিনটি ক্ষেত্রকে ডিভিশন বেঞ্চ দাগি অযোগ্য হিসাবে বলেছিল। কিন্তু মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীরা এই ‘ক্যাটেগরি’তে পড়েন না বলেই দাবি আইনজীবীর।মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেলেরা সাদা খাতা জমা দেননি। তাঁরা একটি প্রশ্নের হলেও উত্তর দিয়েছেন। ফলে তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া উচিত বলে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী। অন্য দিকে কমিশনের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন, মামলাকারীরা সকলেই ‘দাগি অযোগ্য’। তিনি বলেন, “এটা নিয়ে তর্ক করে লাভ নেই। এই সব প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওএমআর শিট কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। সিবিআই যে তালিকা উদ্ধার করেছিল, তার সঙ্গে এসএসসি মিলিয়ে দেখেছে। ওএমআর শিট কারচুপি করে চাকরি পেয়েছেন। এই প্রার্থীরা র‍্যাঙ্ক জাম্প করে চাকরি পেয়েছেন।”

বিচারপতি ভট্টাচার্য আবার মামলাকারীদের উদ্দেশে জানতে চান, তাঁরা এত দিন কী করছিলেন। তিনি বলেন, “৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপনাদের কেন স্কুলে যেতে দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নের উত্তর দিন। তখন আপনারা কী করছিলেন? কেন এসএসসির কাছে গিয়ে বলেননি?” তখন ‘দাগি অযোগ্য’দের আইনজীবী সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেলদের কেন ‘অযোগ্য’ হিসাবে ধরা হল? ‘যোগ্য’ বা ‘অযোগ্য’ তালিকা কোথায়? সব তালিকা কেন প্রকাশ হল না? যদি ‘অযোগ্য’ বলা হয় তবে কেন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। মামলকারীদের আইনজীবী বলেন, “অ্যাডমিট কার্ড দিয়েও কেন বাতিল করা হল? ওই সিদ্ধান্তকেও আমরা চ্যালেঞ্জ করছি।” যদিও কল্যাণ সওয়াল করেন, “সিবিআই বলছে ওএমআর শিট কারচুপি করা হয়েছে। তারা আমাদের দিয়েছে, আমরা গ্রহণ করেছি। সেই হিসাবে তাঁরা অযোগ্য। কারচুপি হয়েছে। ফলে কোন প্রার্থীকে, কত নম্বর দেওয়া হয়েছে সেটা ধরে লাভ নেই।”


You might also like!