দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’—এই বার্তা নিয়েই আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রাখবে ভারতের নৃত্যশিল্পীরা। জাপানের ওসাকায় ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে ‘অল স্পট ফেস্টিভ্যাল’ নামে এক সাংস্কৃতিক উৎসব, যেখানে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের লোকনৃত্যের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হবে। দুর্গাপুজোর মাঝেই আয়োজিত এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন দেশের ২৫ জন শিল্পী, যার মধ্যে রয়েছেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প ‘নাটুয়া’ ধারার শিল্পীরাও। এই উৎসবে যোগ দিতে যে চার লোকশিল্পী যাচ্ছেন, তাঁরা সকলেই পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল বলরামপুর ব্লকের পাঁড়দ্দা গ্রামের। ওই গ্রাম ঢাকি গ্রাম নামে পরিচিত। পাশাপাশি, এর পরিচয় নাটুয়া শিল্পী হাঁড়িরাম কালিন্দীর গ্রাম নামেও। তিনি আজ না থাকলেও তাঁর দেখানো পথেই চলছেন এই গ্রামের শিল্পীরা।
গত রবিবার তারা পুরুলিয়া থেকে কলকাতা আসেন। এরপরে সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছান তাঁরা। বুধবার থেকে বিভিন্ন প্রদেশের শিল্পকলার সঙ্গে নাটুয়াকে যুক্ত করে ২৫ শিল্পী অনুশীলন করে। জানা গিয়েছে, ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁরা রওনা দেবেন জাপান। তবে এটাই প্রথম নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের লোকসংস্কৃতি বিভাগের পক্ষ থেকে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতির কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে এই প্রথমবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাটুয়া। এমনটাই দাবি করেন শিল্পীরা। ওই চার শিল্পী হলেন পাঁড়দ্দা গ্রামের জগন্নাথ কালিন্দী, নৃপেন কালিন্দী, মানবাজার এক ব্লকের জবলার বৈদ্যনাথ মাহাতো এবং বলরামপুরের বেলা গ্রামের শিকার মাহাতো। এরা সকলেরই পাঁড়দ্দা হরিজন নাটুয়া নৃত্য পার্টির সদস্য।
শিল্পী জগন্নাথ কালিন্দী বলেন, “আমি ছৌ নাচ নিয়ে বিদেশ গিয়েছি কিন্তু নাটুয়া শিল্প নিয়ে এই প্রথম। আসলে কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে হারিয়ে যাওয়া নাটুয়ার আরও বিস্তার ঘটাতে। সেই জন্যই এই প্রাচীন শিল্পকলাকে তুলে ধরা হচ্ছে বিদেশের মঞ্চে।” ‘অল স্পট ফেস্টিভ্যাল’ নামে একটি অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন লোক শিল্প থেকে শুরু করে নৃত্যশিল্পীরা মোট আটটি দেশে যাবেন। এটি জাপান দিয়ে শুরু হচ্ছে। নাটুয়া ছাড়াও জাপানে যাচ্ছে ওডিসি, পাঞ্জাবের ভাংড়া, কেরালার কথাকলি সহ একাধিক নৃত্যকলা। এই সময়ে জাপানের একটি পুজোর মন্ডপেও নাটুয়ার শিল্পকলা তুলে ধরবেন এই শিল্পীরা। শিল্পী জগন্নাথ জানান, “ওখানে পুজোর অনুষ্ঠানেও আমাদের একটি নৃত্য পরিবেশনা রয়েছে।” শিব-দুর্গার সেই বিবাহের নাচ দেখার অপেক্ষায় এখন সূর্যোদয়ের দেশ।