দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: নেপালে চলমান অস্থিরতার প্রভাব এখনো স্পষ্টভাবে পড়ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি অঞ্চলের পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে। সীমান্ত এলাকা এখনও অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। দু’দেশের নাগরিকদের সীমান্ত পারাপারের জন্য কড়াকড়ি করা হয়েছে, শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক মানুষই পারাপারের অনুমতি পাচ্ছেন। তবে যে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক নেপালে আটকে পড়েছিলেন, তারা দলে দলে দেশে ফিরছেন, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তাঁদের পরিবার-পরিজনরা। পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে এখনও পুরোপুরি নিয়মমাফিক কাজ হচ্ছে না। বাণিজ্য এখনও বন্ধ রয়েছে, যার ফলে পণ্যবাহী ট্রাক ও লরি সারি বাঁধা অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কৃষি ও অন্যান্য পণ্য নিয়ে কাজ করা ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে জটিল অবস্থা চলায় পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বহু মানুষ চিন্তিত, কারণ ব্যবসার কাজ বন্ধ থাকয় তাঁদের আয়ের উৎস সম্পূর্ণরূপে বন্ধ।
যে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক নেপালে আটকা পড়েছিলেন, তাঁরা ধীরে ধীরে ফিরে আসছেন। অনেকেই সীমান্তে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও অবশেষে দেশে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। একইসঙ্গে এপারের সীমান্তে আটকে পড়া নেপালি নাগরিকরাও উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা তাঁদের বাড়ি ফিরতে চাইলেও সীমান্ত পারাপারে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি কড়া নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে, বিশেষত নেপালের জেল ভেঙে কয়েদিদের পালানোর ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। মূলত এই ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ কয়েদিদের পালানোর ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়েছে।
নেপালের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। এতে করে আশপাশের দেশগুলোতে বিশেষত ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ উদ্বিগ্ন। সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দু’দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কেন্দ্রীয় প্রশাসন পরিস্থিতির প্রতি সংবেদনশীল হয়ে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের অন্যান্য কর্তারা সীমান্ত এলাকা ও নেপালের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন। পাশাপাশি আটকে থাকা নাগরিকদের নিরাপদ অবস্থায় ফেরানোর জন্য তৎপরতা লক্ষ্যনীয়। পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতির দ্রুত সমাধানের অপেক্ষায় করছেন। সীমান্ত এলাকায় বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে বেঁচে থাকেন একাংশ মানুষ, তাই ব্যবসা বন্ধ থাকা তাঁদের জন্য বড় ক্ষতি। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন যে, নেপালের পরিস্থিতি যত দ্রুত স্বাভাবিক হবে তাঁদের সীমান্ত পুনরায় চালু হবে। তারা সরকারের কাছ থেকে সমর্থন ও দ্রুত পদক্ষেপের অনুরোধ জানাচ্ছেন।
নেপালের চলমান অস্থিরতা থেকে উদ্ভূত সংকট এখনো কাটেনি। এর প্রভাব বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও পড়েছে। শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত এলাকা এই সংকটের মাঝেই উদ্বেগ-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আটকে পড়া নাগরিকরা ফিরছে, তবে সীমান্তের বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা চিন্তিত। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। আশা করা যায় শীঘ্রই নেপালের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে।