Breaking News
 
Saltlake Chaos: জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু ডেলিভারি বয়ের, সল্টলেকে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে গ্রেপ্তার ৫! Gandhi vs Savarkar: স্বাধীনতা দিবসের পোস্টারে সাভারকরকে নিয়ে বিতর্ক, মোদি সরকারকে আক্রমণ বিরোধীদের! Roopa Gaguly: ‘আজ মা চলে গেলেন বাবার সঙ্গে দেখা করতে…’—মাকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়! JU Bratya Basu Attack: যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে হামলার ছক স্পেন থেকে-দিল্লি বিমানবন্দরে গ্রেফতার যাদবপুরের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদার! "Detention To Continue": বাংলাদেশি সন্দেহে ধরপাকড় চলবেই, অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিলনা মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট! Kanyasree Divas: কন্যাশ্রী দিবসে সাফল্যের খতিয়ান মুখ্যমন্ত্রীর, বিশ্বের ৫৫২ প্রকল্পের মধ্যে সেরা পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী!

 

Livelihood message

2 years ago

Guava trees:পেয়ারা গাছে অসময়ে ফল ধারণের নানা পদ্ধতি

Various methods of untimely fruiting in guava trees
Various methods of untimely fruiting in guava trees

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ কৃষি প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে। তার ফলে নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তির সাহায্যে   উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনি একটি চাষ হচ্ছে নতুন প্রযুক্তির পেয়ারা। এতে লাগবে এলোভেরা,পাকা আম ও রুটিং হরমোন।

পেয়ারার পুষ্টিগুণ: পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। একটি মাঝারি আকৃতির কমলার চেয়ে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে একটি পেয়ারাতে। লেবুর তুলনায় পেয়ারাতে ১০ গুণ বেশি ভিটামিন এ রয়েছে। এছাড়াও পেয়ারাতে ভিটামিন বি২, ই, কে, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম রয়েছে।

পেয়ারার উপকারিতা:

পেয়ারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে।

পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে।

নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

পেয়ারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা থাকে।

পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।

কাঁচা পেয়ারা ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

পেয়ারার জাতঃ আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের পেয়ারা রয়াছে, যেমন কাজী পেয়ারা, বারি পেয়ারা-২, বারি পেয়ারা-৩ (লাল শাঁস বিশিষ্ট), বাউ পেয়ারা-১ থেকে বাউ পেয়ারা-৯ পর্যন্ত, ইপসা পেয়ারা পাওয়া যায়। স্থানীয় জাতের মধ্যে স্বরূপকাঠি, কাঞ্চননগর ও মুকুন্দপুরী অতি জনপ্রিয় জাত। সাম্প্রতিক সময়ে থাই পেয়ারা চাষে কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

পেয়ারা গাছের বৈশিষ্ট্যঃ পেয়ারা খেতে খুবই সুস্বাদু, মুচমুচে ও সুমিষ্ট। পেয়ারাকে ভিটামিন সি এর ব্যাংক বলা যায়। পেয়ারা গাছ মাঝারি আকারের শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট আকৃতির হয়ে থাকে। শীতের সময় পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শেষের দিকে পেয়ারা গাছে নতুন পাতা ও ডগা আসে। সাধারণত বর্ষা ও শীত ঋতুতে গাছে পেয়ারা হয়ে থাকে। তবে শীত অপেক্ষা বর্ষাকালে ফলন একটু বেশি হয়। বর্ষাকালে জলীয়ভাব বেশি থাকায় ফলের মিষ্টতা ও অন্যান্য গুণাগুণ শীতকালের ফলের থেকে অনেকাংশেই কম থাকে। তাছাড়া জলীয়ভাব বেশি থাকায় পাকা ফল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে দাম থাকে কম। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সব জাতের পেয়ারার গুণাগুণ শীতকালে বেড়ে যায়, রোগ ও পোকার আক্রমণও কম থাকে। ফলের আকৃতি এবং রং সবদিক থেকেই সুন্দর হওয়ায় এ সময়ে পেয়ারার দামও থাকে বেশি। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই বর্ষাকাল বাদে কিভাবে অন্যান্য ঋতুতে অত্যাধিক হারে উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়েছে। যার ফলে পেয়ারা গাছে অসময়ে ফলধারণ এখন খুব সহজেই সম্ভব হচ্ছে।

পেয়ারা গাছে অসময়ে ফলধারণের পদ্ধতিগুলোঃ বর্তমানে পেয়ারা গাছে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের জন্য কৃষি বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। সেগুলো হলো শিকড় উন্মুক্তকরণ পদ্ধতি, হরমোন জাতীয় পদার্থ প্রয়োগ পদ্ধতি ও শাখা-প্রশাখা বাঁকানো পদ্ধতি।

ক. শিকড় উন্মুক্তকরণ পদ্ধতিঃ পেয়ারা গাছের গোড়ার মাটি তুলে বা আলগা করে দিতে হবে। মাটি তুলে গাছের শিকড়গুলো বের করে নাড়াচাড়া দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে ০১ থেকে ১.৫ মিটার (পেয়ারা গাছের ক্যানপি) পর্যন্ত মাটি কোদাল, শাবল বা নিড়ানি দ্বারা খুব ভালোভাবে সাবধানতার সাথে মাটি উন্মুক্ত করে দিতে হবে। মাটি তুলে দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে, গাছের শিকড়গুলো কেটে না যায়। বিশেষ করে গাছের আসল মূল (টেপ রুট) কাটা ও উৎপাটন করা যাবে না। গাছ নাড়ানো যাবে না। সাধারণত যে কোনো বয়সের পেয়ারা গাছে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়। গোড়ার মাটি উন্মুক্ত করার কমপক্ষে ১০-১৫ দিন পর পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যাকালে পরিমাণমতো সার ও সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ পদ্ধতিতে গাছের পাতা লাল হয়ে ঝড়ে যেতে পারে। আমাদের দেশে এপ্রিল-মে মাসে পেয়ারা গাছে শিকড় উন্মুক্ত করতে হয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে পেয়ারা গাছে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ফলধারণ করে।

খ. হরমোন জাতীয় পদার্থ প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সাধারণত ২-৫ বছর বিশিষ্ট পেয়ারা গাছে হরমোন প্রয়োগ করতে হয়। এপ্রিল-মে মাসে হরমোন প্রয়োগ করার উৎকৃষ্ট সময়। এ সময়ে হরমোন জাতীয় পদার্থ হিসেবে ২,৪-ডি; ন্যাপথালিন এসিটিক এসিড (এনএএ), ১০% ইউরিয়ার দ্রবণ এসব রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। স্প্রে মেশিন বা ফুটপাম্প দিয়ে খুব ভালো করে পেয়ারা গাছের পাতা ভিজিয়ে দিতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই গাছের পাতা লালচে হয়ে ঝড়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে গাছে সঠিক পরিচর্যা নিলে নতুন পাতা জন্মাবে এবং অসময়ে ফলধারণ হবে।

গ. শাখা-প্রশাখা বাঁকানো পদ্ধতিঃ শাখা-প্রশাখা বাঁকানো পদ্ধতি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি। পেঁয়ারার ডাল বাঁকালেই প্রায় দশগুণ বেশি ফলন হয়। তাছাড়া একই প্রযুক্তিতে বছরের বার মাসই ফল ধরানো সম্ভব হয়। ফলের মৌসুমে গাছের ফুল ছিঁড়ে দিয়ে এ প্রক্রিয়াকে আরও প্রভাবিত করা যায়, যার ফলে সারা বছরই ফলের মৌসুমের তুলনায় কমপক্ষে আট থেকে দশগুণ ফল ধরবে গাছে। এ লক্ষ্যে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গবেষণার মাধ্যমে ‘গাছের ডাল বাঁকানো’ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বছরে দুইবার অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে এবং হেমন্তকালে শাখা-প্রশাখার নিয়ন্ত্রিত বিন্যাসের মাধ্যমে সারা বছর পেয়ারার ফুল ও ফলধারণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গাছের বয়স দেড় থেকে দুইবছর হলেই এ পদ্ধতি শুরু করা যাবে এবং পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত এ পদ্ধতিতে ফলন বাড়ানো সম্ভব। ডাল বাঁকানোর ১০ থেকে ১৫ দিন আগে গাছের গোড়ায় সার ও পানি দিতে হয়। ডাল বাঁকানোর সময় প্রতিটি শাখার অগ্রভাগের প্রায় এক থেকে দেড়ফুট অঞ্চলের পাতা ও ফুল-ফল রেখে বাকি অংশ ছেটে দিতে হয়। এরপর ডালগুলোকে সুতা দিয়ে বেঁধে তা বাঁকিয়ে মাটির কাছাকাছি করে সাথে অথবা খুঁটির মাধ্যমে মাটিতে বেঁধে দিতে হয় । গ্রীষ্মকালে মাত্র ১০ থেকে ১২ দিন পরেই নতুন ডাল গজানো শুরু হয়। নতুন ডাল ১ সেমি. লম্বা হলে বাঁধন খুলে দেয়া হয়। আর  হেমন্তকালে নতুন ডাল গজাতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগে। ডাল বাঁকানোর ৪৫ থেকে ৬০ দিন পরে ফুল ধরা শুরু হয়। এভাবে গজানো প্রায় প্রতি পাতার কোলেই ফুল আসে। এ পদ্ধতিতে সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়।

বিশেষ ব্যবস্থাপনাগুলোঃ পেয়ারা গাছের আকার আকৃতি, কাঠামো ও গুণগত মানের ফলধারণের জন্য গাছে বিশেষ কতগুলো ব্যবস্থাপনা করা যায়। এ ব্যবস্থাপনাগুলোর মধ্যে অঙ্গ ছাঁটাই, ডাল নুয়ে দেওয়া, ফুল ছিঁড়ে দেওয়া, ফল পাতলাকরণ, ফল ঢেকে দেওয়া এসব পদ্ধতি।

অঙ্গ ছাঁটাই : গাছের মরা, শুকনা, চিকন, লিকলিকে, রোগাক্রান্ত ও প্রয়োজনহীন ডালপালা ছাঁটাই করাকে অঙ্গ ছাঁটাই বলা হয়। রোপণকৃত চারা বা কলমের আকার, আকৃতি ও কাঠামো সুন্দর করার উদ্দেশ্যে মাটি থেকে ১.০ থেকে ১.৫ মিটার ওপরে বিভিন্ন দিকে ছড়ানো ৪ থেকে ৫টি ডাল রেখে গোড়ার দিকের সব ডাল ছাঁটাই করে দিতে হবে। বয়স্ক গাছের ফল সংগ্রহের পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অঙ্গ ছাঁটাই করা হয়। এতে গাছে নতুর ডালপালা গজায়, প্রচুর ফুল হয় এবং গুণমানের উৎকৃষ্ট ফলধারণ করে।

ডাল নুয়ে দেওয়া : পেয়ারা গাছের খাঁড়া ডালে সাধারণত ফুল ও ফল খুবই কম ধরে। তাই খাঁড়া ডালগুলোকে যদি ওজন বা টানার সাহায্যে নুয়ে দিলে প্রচুর পরিমাণ নতুন শাখা গজায়। নতুন ডালপালায় গুণগতমানের ফলধারণ ও ফলন বৃদ্ধি পায়।

ফুল ও ফল পাতলাকরণ : কাজী পেয়ারা ও বারি পেয়ারা-২ এর গাছে প্রতি বছর প্রচুরসংখ্যক ফুল ও ফল আসে। ফল আকারে বড় হওয়ার গাছের পক্ষে সব ফল ধারণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলের ভারে ডালপালা ভেঙে যায় এবং ফল আকারে ছোট ও নিম্নমানের হয়। এ অবস্থায়, গাছকে দীর্ঘদিন ফলবান রাখতে ও মানসম্পন্ন ফল পেতে হলে প্রথমেই কিছু ফুল এবং পরে ফল ছোট থাকা অবস্থায় (মার্বেল অবস্থা) ৫০-৬০% ফল পাতলা করে দিতে হবে। কলমের গাছের ক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতেই প্রথম বছর ফল নেওয়া উচিত হবে না। তাই ফুল আসার সাথে সাথে ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া প্রয়োজন। দ্বিতীয় বছর অল্প পরিমাণ ফল নেওয়া ভালো। এভাবে গাছের বয়স ও অবস্থা বুঝে ফল রাখতে হবে। পরিকল্পিত উপায়ে ফুল বা ফল পাতলা করে প্রায় সারা বছর কাজী পেয়ারা ও বারি পেয়ারা-২ জাতের গাছে ফল পাওয়া যাবে।

ফ্রুট ব্যাগিং বা ফল ঢেকে দেওয়াঃ পেয়ারা ছোট অবস্থাতেই ব্যাগিং করলে রোগ, পোকামাকড়, পাখি, বাদুড়, কাঠবিড়ালি এসব থেকে সহজেই রক্ষা করা যায়। ব্যাগিং করা ফল অপেক্ষাকৃত বড় আকারের এবং আকর্ষণীয় রঙের হয়। ব্যাগিং বাদামি কাগজ বা ছোট ছিদ্রযুক্ত পলিথিন দিয়ে করা যেতে পারে। ব্যাগিং করলে সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে প্রতিহত হয় বিধায় কোষ বিভাজন বেশি হয় এবং ফল আকারে  বড় হয়। ব্যাগিং করার আগে অবশ্যই টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি/লিটার পানির সাথে মিশিয়ে সব ফল ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

You might also like!