দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সুপার নিউমেরারি পদে নিয়োগ নিয়ে আবারও কমিশনের ব্যাখ্যা চাইল আদালত।মেধা তালিকায় নাম রয়েছে অথচ চাকরি পাননি। এমন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ১৬ হাজার সুপার নিউমোরারি পোস্ট তৈরি করেছে রাজ্য। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকা চাকরিপ্রার্থীদের পাশাপাশি যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদেরও ওই তালিকায় আনতে হবে। রাজ্যের এই নির্দেশ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। রাজ্য এবং এসএসসি কে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। কিন্তু রাজ্যের জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। এব্যাপারে হলফনামা দেওয়ার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের মামলার সঙ্গে এই নিয়োগে বাধা আছে কি না তাও রাজ্য ও বোর্ডকে জানাতে হবে। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, এই হলফনামা পাওয়ার পরই নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার সংশ্লিষ্ট মামলাটিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, ''একজন ব্যক্তিকে দুবার নিয়োগ করা যায় না। রাজ্য বলছে, এই ১৬০০ পোস্ট তৈরির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। আদালতকে হলফনামা দিয়ে এব্যাপারে জানাতে হবে।''
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "৩৯১ প্রার্থীর মামলা সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিচারাধীন। রাজ্য ও বোর্ড সেখানে আবেদন করে। এই পোস্ট তাই অবৈধ। সুতরাং নিয়োগ যে অবৈধ হবে একথা বলাই বাহুল্য।"
সংশ্লিষ্ট মামলাটি শরীর শিক্ষা এবং কর্ম শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বলে জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। ডিভিশন বেঞ্চের প্যানেল প্রকাশের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে । কিন্তু এই ১৬০০ পোস্ট তৈরি নিয়ে কোনো মামলা সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিচারাধীন নেই । যদিও এই পোস্ট বোর্ড তৈরি করেনি বলে জানান এসএসসির পক্ষের আইনজীবী সুতানু পাত্র। তিনি বলেন, ''মেনে নিচ্ছি এটা অবৈধ নিয়োগ। কিন্তু বোর্ডের একটা সিধ্যান্ত নয়।"
সেক্ষেত্রে কেন এই পোস্ট তৈরি করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে এজি কিশোর দত্ত বলেন, ''চাকুরীপ্রার্থীদের কর্মহীন না করতে রাজ্য এই পোস্ট তৈরি করে। রাজ্যের এই অধিকার আছে। ১৯ মে ২০২২ সালে ১৬০০ পদ তৈরি করা হয়েছিল। সকলের কথা মাথায় রেখেই এই পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৭৫০ পদ কর্মশিক্ষার এবং বাকি শরীর শিক্ষা।
সব পক্ষের আইনজীবীর সওয়ালের পর বিচারপতি বলেন, ''অবৈধ চাকরি প্রাপকদের বহাল রাখতে যে এই পোস্ট তৈরি করা হয়েছে তা হাইকোর্টের কাছে মেনে নিয়েছে বোর্ড । কিন্তু রাজ্য কি এই ধরনের পোস্ট তৈরি করে বেআইনি নিয়োগ হইয়া কর্মীদের রাখতে পারে? এর ফলে যারা চাকরিপ্রার্থী তারা চাকরির যোগ্য হয়েও চাকরি পেলেন না।'' রাজ্যের জবাবে খুশি হয়নি হাইকোর্ট। এব্যাপারে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।