দুর্গাপুর : আবারও বন্যার ভ্রুকুটি। রাজ্যের উত্তর ও দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করল মৌসম ভবন। এবার জল সঙ্কট কাটাতে দুর্গাপুর ব্যারেজ সংলগ্ন বন্যার জল ধরে রাখতে নতুন ভাঁড়ারের তোড়জোড় শুরু করে ডিভিসি ও রাজ্য সেচ দফতর।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নিম্নচাপের দরুন প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বেশকিছু রাজ্যে ভুমি ধসও হয়েছে। গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, ছত্রিশগড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তার দরুন পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি না হলেও দামোদর উপত্যকায় জারি হয় হলুদ সতর্কতা। ডিভিআরআরসি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মাইথন জলাধার থেকে ২৪ হাজার ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ২৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এদিকে মাইথন পাঞ্চেত থেকে ছাড়া জল দুর্গাপুর ব্যারেজে ঢুকতে শুরু করে। যদিও সকাল থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজে ৫৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু করে দেয়। আবারও নিম্নচাপে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় মৌসম ভবন।
মৌসম ভবনের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, আগামী ১০ থেকে ১৩ আগস্ট-এর মধ্যে বেশিরভাগ জায়গায় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত (০৭-১০ সেমি) হতে পারে এক দুই জায়গায়। যার মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। তার সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে এক বা দুই জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। ১০ তারিখে পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম জেলার এক বা দুই জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত (০৭-১০ সেমি) হতে পারে। ১১ আগস্ট উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। নীচু এলাকা জলমগ্ন হতে পারে। প্রশ্ন তাহলে কি আবারও বন্যার ভ্রুকুটি? দামোদর উপত্যকা পশ্চিম বর্ধমানে বৃষ্টিপাত হলে প্রভাব পড়বে দুর্গাপুর ব্যারেজের ওপর। জলস্তর বৃদ্ধি পায় ব্যারেজের।
বলা বাহুল্য, স্বাভাবিক ভাবেই ওই জল ধরে রাখার বিকল্প কোন ব্যাবস্থা নেই দুর্গাপুর ব্যারেজের। ভারী বর্ষনের বন্যার জল ধরে রাখা নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে ডিভিসি ও রাজ্য সেচ দফতর। প্রশ্ন, ওই জল ধরে রাখার ভাঁড়ার কোথায়? বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় লক গেটের পাশাপাশি দুর্গাপুর ব্যারেজের নিন্ম দামোদরের সেচ ক্যানেলগুলি সংস্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু, দামোদর নদের ওপর দুর্গাপুর ব্যারেজ ও রনডিহা জলাধারে পলি পড়ে নাবত্যা কমেছে। দুর্গাপুর (ডিভিশনের) রাজ্য সেচ দফতরের আধিকারিক সঞ্জয় মজুমদার বলেন,"মাইথন ও পাঞ্চেতে ছাড়া জল ব্যারেজে ঢুকতে শুরু করেছে। আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা রয়েছে। এখন ব্যারেজ থেকে ৫৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। সেরকম বৃষ্টিপাত হলে ততক্ষনে অনেকটাই খালি হবে ব্যারেজ। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হয়েছে।" ডিভিআরআরসির সদস্য সচিব শশী রাকেশ বলেন," মৌসম ভবনের সূচনা অনুযায়ী মাইথন, পাঞ্চেতে জলাধারে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। সতর্কতা অনুযায়ী নিম্নদামোদরে প্রভাব পড়তে পারে। ঝাড়খন্ডে বৃষ্টিপাত হলে প্রভাব পড়ে এই দুই জলাধারে। তবুও পরিস্থিতির ওপর সজাগ রয়েছি।"