দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার সত্যিই বিশেষ রণপন্থা দেখিয়েছে জোড়া ফুল শিবির। ব্রিগেডের সভার গর্জন, দিল্লি বধের ডাক, একইসঙ্গে ৪২টি আসনে চমক দিয়ে প্রার্থী ঘোষণায় রীতিমতো কোন ঠাঁসা করে দিয়েছে গেরুয়া বাহিনীকে। তৃণমূলের শক্তি যে সব দিক থেকেই অটুট তা রবিবার বুঝে গিয়েছে সমগ্র বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার ব্রিগেডের সভা থেকে কার্যত গেরুয়া শিবিরকে তুলোধোনা করেছেন। গত ডিসেম্বরে ব্রিগেডে একটি ধর্মীয় কর্মসূচি ডেকে মুখ পোড়ার ভয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসা বাতিল করতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে।
বাংলা দেখেছে ব্রিগেড সেদিন ছিল কার্যত ফাঁকা। শুধু তাই নয়, ধর্মতলায় অমিত শাহের সভাতে লোক না হওয়ায় মুখ পুড়েছিল গোটা বাংলার। আর ঠিক এরপরই লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সভার এই জনগর্জন কার্যত চাপে ফেলেছে বিজেপিকে। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্রিগেডের রিস্ক নিতে নারাজ বিজেপি। ফলে শহর কলকাতার বুকে তাঁদের তরফ থেকে জন সমাবেশ ঘটবে কি না, সেই বিষয়ে এখনই কোনোরকম সিদ্ধান্তে উপনীত হয়নি গেরুয়া শিবির।
দলের এক বৃহৎ অংশের এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, এবারও লোক না হওয়ার দেখা যাচ্ছে। যা হলে পুনর্বার মুখ পুড়বে দলের। তাই এখনই ব্রিগেড নয়। আপাতত তিন-চারটি ক্লাস্টার ভিত্তিক সভা নিয়েই অগ্রসর হতে চাইছে পদ্ম শিবির। তৃণমূলের গতকালের সভা নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, ‘‘৪২টি আসনেই তৃণমূল প্রার্থীরা দ্বিতীয় হবে বলে তাদের আগাম অভিনন্দন জানিয়ে রাখলাম।’’ প্রকাশ্যে সুকান্তরা যাই দাবি করুন না কেন, দলের অন্দরে কোন্দল কাঁটা নিয়ে আশঙ্কা চরমে।
বিজেপি প্রার্থী নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ চলছে আলিপুরদুয়ার, রানাঘাট, হুগলি, বাঁকুড়া কেন্দ্রে। এরই মধ্যে ঝাড়গ্রামের সাংসদ দল ছেড়েছেন। পদ্ম শিবির ছেড়ে তৃনমূলে গেছেন বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। আবার মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিকে নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে সেখানকার দলের কর্মীদের একাংশের মধ্যে। অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডাকে ই-মেল মারফৎ সেই ক্ষোভের কথা জানিয়েছে তারা। কর্মীদের অভিযোগ, ইংলিশবাজারের বর্তমান বিধায়ক হিসাবে সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি।
এদিকে, গেরুয়া শিবিরের অন্দরের রিপোর্ট, এখনও পর্যন্ত বাংলায় যে চারটি সভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করেছেন, তার মধ্যে শিলিগুড়ি ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের তিনটি সভাতে আশানুরূপ জনসমাগম হয়নি। উনিশের ভোটের মোদির সভার থেকে চব্বিশের এই সভাগুলি অনেকটাই ম্লান। যেটা ভাবাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। তাই শাসকদল ব্রিগেডে মেগা সমাবেশ করে চমকে দিলেও, পাল্টা ব্রিগেডে সভা করার চ্যালেঞ্জ দেখাতে পারছে না বঙ্গ বিজেপি। এদিন তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশকে র্যাম্প ওয়াক বলে কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার।