দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাঁদের দ্রুত সাজা দেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে বিচারব্যবস্থা অর্থহীন হয়ে পড়বে। নিয়োগ মামলার শুনানিতে এমনটাই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। সোমবার নিয়োগ মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি সাহার জামিনের আবেদনের শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। একইসঙ্গে সিবিআই-কে দ্রুত দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চের।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি ঘোষ। তাঁদের জামিনের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে দুই অভিযুক্তের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। সংশ্লিষ্ট মামলাটিতে এদিন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগ এলে দ্রুত মামলার তদন্ত করে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তা না হলে কখনও দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে না।“
সিবিআই নিয়োগ মামলার চার্জশিট পেশ করেছে। তবে আরও কিছু তদন্ত বাকি আছে বলে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এতেই বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তীব্র ভৎর্সনা করে হাইকোর্ট।
এদিন কুন্তলের আইনজীবী বলেন, "প্রায় এক বছরের উপর জেল বন্দি কুন্তল ঘোষ। তদন্ত প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না সিবিআই। কুন্তলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে। অন্যদিকে, নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নেই। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক, এই আর্জি জানান নীলাদ্রির আইনজীবী।
এরপরই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআই-র বক্তব্য জানতে চায় হাইকোর্ট। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ৪ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। খুব কম টাকা ফেরত দেওয়া হলেও বাকি টাকা এখনও ফেরত দেওয়া হয়নি। আরও টাকা তোলা হয়েছে কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষ। এই অবস্থায় জামিন হলে, তদন্তে ক্ষতি হবে।
সিবিআই-র আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, “আমি কোনও জনপ্রতিনিধির নাম করে কোনও ব্যক্তির থেকে অর্থ সংগ্রহ করলে সেটাই অপরাধ। আমার সঙ্গে সেই জনপ্রতিনিধির যোগাযোগ আছে কিনা সেটা ধর্তব্যের বিষয়ই নয়। এতদিনে ট্রায়াল শুরু হয়নি। দুর্নীতি দমন আইনের ধারা যুক্ত করার ক্ষেত্রে হয় তদন্তকারী আধিকারিকরা অজ্ঞতা দেখিয়েছেন, না হলে তাঁরা অভিযুক্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেনব।“
সিবিআইয়ের কাছে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে আদালত। নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল-নীলাদ্রি কীভাবে যুক্ত, তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে-এই সমস্ত বিষয় বিশদে জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।