kolkata

1 year ago

Medical Student : বাড়ি থেকে যাতায়াত পিজিটিদের, ধন্দে পরিষেবা

Home-to-home transportation services to PGTs, businesses
Home-to-home transportation services to PGTs, businesses

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মেডিক্যাল কলেজ কিংবা টিচিং হাসপাতালে মাল্টি-স্পেশ্যালিটি পরিষেবা টিকিয়ে রাখেন মূলত স্নাতকোত্তর পড়ুয়া বা পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি)-রা। ইন্ডোর ওয়ার্ডে কিংবা ইমার্জেন্সিতে রাতবিরেতে গুরুতর অসুস্থ রোগী এলে কিংবা খুব ভোরে রোগী আচমকা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের উপরই দায়িত্ব বর্তায় পরিস্থিতি সামলানোর। ফলে পিজিটিদের উপর প্রবল কাজের চাপ থাকে।

তবে সাম্প্রতিক কিছু নিয়ম বদলের জেরে এই প্রথাটাই হোঁচট খাচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ফলে শাঁখের করাত দশা ডাক্তারির স্নাতকোত্তর পঠনপাঠনের অনেক প্রতিষ্ঠানে। একদিকে পিজিটিদের চাপ কমানোর চেষ্টা যেমন চলছে, অন্যদিকে তেমনই আবার সেটা করতে গিয়ে স্বাভাবিক পরিষেবা টিকিয়ে রাখতে সমস্যা হচ্ছে। হিমশিম খাচ্ছেন বিভাগের সিনিয়র ডাক্তাররাও।

পিজিটিদের মানসিক চাপ কমাতে গত নভেম্বরে সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি ক্যাজুয়াল লিভ, কাজের চাপ কমানো, হস্টেল বাধ্যতামূলক না থাকা ইত্যাদির সুপারিশ করেছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। সব রাজ্যকেই এ নিয়ে পদক্ষেপ করার কথাও জানানো হয়েছিল। তবে নিয়ম শিথিল করার মাস চারেকের মাথায় দেখা যাচ্ছে, হরেক সমস্যা হচ্ছে।

প্রয়োজনের সময়ে রেসিডেন্ট ডাক্তার না পাওয়া যাওয়া এবং আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পিজিটি না থাকা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। নয়া নিয়মে তাই একপ্রকার আক্ষেপই করছেন সিনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। কলকাতার একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালের এক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, বাধ্যতামূলক হস্টেলে থাকার নিয়মটা তুলে দেওয়া। এতে কাজের মান ভালো থাকে না। রোগী পরিষেবাও ব্যাহত হয়।’

তিনি জানাচ্ছেন, কলকাতায় বসবাসকারী পিজিটিরা বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করতেই পারেন। তবে অনেকে আছেন, যাঁদের কেউ হয়তো বারুইপুর, কেউ বা ব্যান্ডেল কিংবা বারাসত থেকেও যাতায়াত করছেন। ‘ট্রেন ধরার তাড়া থাকলে তো আর ডিউটি আওয়ারের শেষের দিকে কাজের মান ভালো থাকে না,’ মন্তব্য ওই সিনিয়র ডাক্তারবাবুর।

একই সুর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক ইএনটি সার্জেনের। তবে ওই শিক্ষক-চিকিৎসক জানাচ্ছেন, তাঁদের ডিপার্টমেন্টের চেয়েও এই সমস্যা বেশি মেডিসিন, গাইনি, সার্জারি, পেডিয়াট্রিক্সের মতো বড় বিভাগগুলিতে, যেখানে অনেক রোগী ভর্তি থাকেন এবং রোগীদের আচমকা শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।

ফলে ওই সব বিভাগে আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়ায় রাতের দিকে কিংবা ভোরের দিকে। তাঁর কথায়, ‘পিজিটিদের কাজের চাপ কমানো অবশ্যই দরকার। টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি সমর্থনযোগ্য নয়। তবে পিজিটিদের হস্টেলে থাকা বাধ্যতামূলক করা দরকার আগের মতো।’

শিক্ষক-চিকিৎসকদের মতো সিনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশই মনে করছে, পিজিটিদের ২৪ ঘণ্টার যে কোনও সময়ে জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যায় যদি তাঁরা হস্টেলে থাকেন। বাড়ি থেকে যাতায়াত করলে কিংবা আর যখন-তখন ক্যাজুয়াল লিভ নিলে পরিষেবা সামলানো মুশকিল হয়ে যায় বলেই মনে করেন তাঁরা।

এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক ফ্যাকাল্টি বলেন, ‘পিজিটিরা হস্টেলে থেকে কাজ করবেন না, সেটা ভাবাই যাচ্ছে না। অথচ সেটা হচ্ছে! তাঁরা অনেকেই এখন বাড়ি থেকে যাতায়াত করছেন। ফলে অনেক সময়েই পিজিটিরা সকাল ৯টার ক্লিনিক্যাল ক্লাসে ঢুকতে দেরি করছেন। হস্টেলে সিনিয়রদের সুপরামর্শ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।’

তিনি জানান, ডিউটি আওয়ার শেষের ঘণ্টাখানেক আগে গুরুতর অসুস্থ রোগী এলে ওই সব পিজিটিদের একাংশ সেই রোগীকে দেখছেন না। সতীর্থ পিজিটিকে জানাচ্ছেন, রোগীকে দেখে নিতে। কারণ, তাঁকে বাড়ি ফিরতে হবে।

You might also like!