দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেবার আর্জি জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তাঁর কথায়, 'বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে আড়াই হাজার বছর ধরে।' এবার তাই বাংলাকেও কেন্দ্র ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে মেনে নিক।
নবান্ন থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে অতীতে নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। বৃহস্পতিবার ভাষা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনতে শোনা যায় তাঁকে। বলেন,'অন্য রাজ্য স্বীকৃতি পেলে কেন বাংলা পাবে না?' এ নিয়ে এ রাজ্যে অতীতে যে দল ক্ষমতাসীন ছিল, তাঁদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। বলেন,'
যাঁরা আগে ছিলেন, তাঁরা এসব নিয়ে ভাবেননি। রাজনীতিতে এত ব্যস্ত ছিলেন যে এসব নিয়ে চর্চার সময় পাননি।' তাঁর সমালোচনার তির যে বাম-জমানার দিকেই, সে ইঙ্গিত মোটামুটি স্পষ্ট। আড়াই হাজার বছর ধরে বিবর্তিত বাংলা ভাষা কেন ধ্রপদী ভাষা হওয়ার দাবিদার, সেই বিষয়ে বিস্তর তথ্য় ও নথিও তৈরি করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনাও করেছে তাঁর সরকার। তার পরেই এই চিঠি।
শুধু ভাষা নয়, রাজ্যের নাম বদলের প্রসঙ্গটিও শোনা যায় তাঁর মুখে। বলেন, 'রাজ্যের নাম নিয়ে বিধানসভায় বিল পাস হয়েছে, তাও আটকে আছে। রাজ্যের নাম বাংলা হলে আপত্তি কোথায়?' মমতার প্রশ্ন 'বম্বে থেকে মুম্বই হয়েছে, আমাদের কেন হবে না, কী অপরাধ?' এ ব্যাপারে তিনি যে কেন্দ্রকে অনেক অনুরোধ করেছেন, সে কথাও শোনা যায় তৃণমূলনেত্রীর মুখে। তাঁর আরও দাবি, 'ওয়েস্ট বেঙ্গল' থেকে রাজ্যের নামবদল থেকে এ রাজ্যের ছেলেমেয়েরা বাইরে গিয়েও অনেক সুবিধা পাবে। সরকারি মিটিংয়ের ক্ষেত্রেও 'অ্যালফাবেটিকালি' পরের দিকে থাকার অসুবিধা পোহাতে হবে না এই রাজ্যকে। এই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে যা যা প্রশ্ন করা হয়েছিল, সবেরই সদুত্তর দিয়েছে রাজ্য। তার পরও নামবদলের বিষয়টি যে তিমিরে, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে আক্ষেপ তাঁর। সেই নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
কয়েক মাস পরেই দেশে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা করা ও রাজ্যের নামবদলের বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি পাঠানোর মধ্যে আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।