দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে আর কোনও বাণিজ্য আলোচনা হবে না—সাফ জানিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ তেল আমদানির কারণে ‘শাস্তি’ হিসাবে ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর একদিন পরেই, বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। তাঁর সাফ কথা, যতদিন না শুল্কসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হচ্ছে, ততদিন ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ থাকবে। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হল। তাঁর কথায়, রাশিয়া থেকে ভারত এখনও তেল কেনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার শাস্তিস্বরূপ বাড়তি কর বসানো হল ভারতীয় পণ্যের উপর। অর্থাৎ এবার ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাবে আমেরিকা। এক্সিকিউটিভ অর্ডার সই করে ট্রাম্প জানান, ২১ দিন পর থেকে কার্যকর হবে ভারতের নয়া শুল্কহার।সেখানে স্পষ্ট লেখা হয়, ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভারত বর্তমানে রুশ তেল আমদানি করছে। তাই আমার মনে হয় ভারতের উপর আরও বেশি শুল্ক চাপানো দরকার।’
মার্কিন আধিকারিকদের মতে, ভারতীয় পণ্যের উপর প্রথমে যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসেছিল সেটি কার্যকর হচ্ছে ৭ আগস্ট থেকে। পরবর্তী ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে তারও ২১ দিন পর থেকে। তবে যেসব পণ্য ইতিমধ্যেই ভারত থেকে আমেরিকায় রওনা দিয়েছে তার উপর শুল্ক বসাবে না মার্কিন প্রশাসন। এহেন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, “ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে। এরপরে কি আপনি আশা করেন যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা আরও বাড়বে?” ট্রাম্পের জবাব, “না, যতদিন না এই সমস্যা মিটছে ততদিন আলোচনা হবে না।”
এই ঘটনার জেরে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। দীর্ঘদিন ধরেই ওই চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা কোনও সুফল আনেনি। এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সেরে ফেলেছে, যা ভারতের কূটনৈতিক পরিসরে আরও চাপ তৈরি করছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থান ভারতের জন্য কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক—উভয় দিক থেকেই বড় ধাক্কা। এখন দেখার, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলায় এবং ভবিষ্যতে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক কোন পথে এগোয়।