জলপাইগুড়ি, ২১ অক্টোবর : জলপাইগুড়ি শহরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত জাতীয় সড়কের পাশে গোশালা মোড়ে মাড়োয়ারি শ্মশানের গায়ে অবস্থিত শ্মশানকালী মন্দির। মূলত স্থানীয়দের দ্বারাই পরিচালিত হয়ে আসছে এই মন্দিরের কালী পুজো। এবারও হচ্ছে সেই আয়োজন।
মন্দিরের পুরোহিত সুভাষ চৌধুরী জানালেন, 'বাম আমলে কিছু সাহায্যে পেলেও এই আমলে কোনও সাহায্যই পাইনি। অথচ হঠাৎ এক সাধু এসে বসে থাকায় ভামরি দেবী মন্দির বিখ্যাত হয়ে গেল!' ২৭৫ বছরের এই মায়ের মন্দিরের সংস্কারও হল না। আক্ষেপ মন্দির কমিটিরও।
বঙ্কিমচন্দ্রের বিখ্যাত উপন্যাস 'দেবী চৌধুরানী'তে এই অঞ্চলের কাহিনি বর্ণিত। এখনও এ অঞ্চলে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের নামে নানা প্রবাদ প্রচলিত। সাধারণ মানুষের মধ্যে এঁদের জনপ্রিয়তাও দেখার মতো। যদিও অনেকেই বলেন, প্রকৃত ঘটনা যা, বঙ্কিম তাঁর উপন্যাসে সেভাবে সেটা অনুসরণ করেননি। তবুও মূলত বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসের সূত্রেই এই মন্দিরটি পরবর্তী সময়ে বিখ্যাত হয়। আজও মানুষের আগ্রহ রয়েছে।
শতাব্দীপ্রাচীন জলপাইগুড়ির দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরের ঐতিহাসিক পেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ। এবার ২৭৬ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে এই মন্দিরের পূজা। এই পুজো হয় শ্যামা পূজার দিন। সেজন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মন্দির পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এখানে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে ভিড় জমান মন্দিরে।কালী পূজার পাশাপাশি এখানে শিবের আরাধনাও হয়। পূজার দিন মায়ের জন্য ভোগ নিবেদন হয়। দেবীকে তিস্তার মহাশোল মাছ ও বোয়াল মাছ দেওয়া হয়। সুরা দিয়ে মাকে স্নান করানো হয়। মায়ের এক হাতে সুরার পাত্র, অন্য হাতে নরমুন্ডু। রাতভর চলে পুজো।