kolkata

1 year ago

Manoranjan Byapar: তৃণমূলে দ্বন্দ্বের মাঝেই বিস্ফোরক বিধায়ক মনোরঞ্জন

Explosive MLA  Manoranjan Byapar in the midst of grassroots conflict
Explosive MLA Manoranjan Byapar in the midst of grassroots conflict

 

কলকাতা, ৩ জানুয়ারি  : একদিকে তৃণমূলের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব, তার মধ্যেই ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! দলের অভ্যন্তরে বহুদিন ধরেই অল্প-বিস্তর বিদ্রোহ করে আসছিলেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এবার রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটালেন তিনি।

বলাগড়ের এক 'উপনেতা' এবং তৃণমূলেরই এক নেত্রীর দুর্নীতি ফাঁস করার হুমকি দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানালেন, 'এসপার-ওসপার' করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির দ্বারস্থ হবেন!

বুধবার সকালেই একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন মনোরঞ্জনবাবু। তাতে বলাগড়ের বিধায়কের দাবি, "এক মাটির মাফিয়া বালি মাফিয়া গাঁজার পাচারকারীদের সহায়ক জুয়ার বোর্ড চালানো উপনেতা- আমাকে চোর বলেছে খুনি বলেছে ধর্ষণ বলছে। আমি নাকি- মহাশ্বেতা দেবীর লেখা নিজের নামে ছাপিয়ে কয়েক লক্ষ না কোটি কামিয়েছি, সেই আমাকে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলাগড়ের বিধায়ক বানিয়েছেন। আমি যদি এই তাহলে দিদি বা কেমন মানুষ? তিনি আমার বিষয়ে কোন খোঁজ খবর নিলেন না? আর এই দলটি বা কেমন ? যারা এমন একটা চোর ছ্যাচোরকে দলের সঙ্গে যুক্ত করলেন? তাহলে যে বিরোধীরা বলে 'চোর চোর চোর চোর- তৃনমূলের সবাই চোর'! সেটা কি সত্যি? চোর ছাড়া দলে আর কোনও লোক নেই?"

আগামী ৭ জানুয়ারি ফেসবুকে লাইভে আসবেন বলে জানিয়েছেন দলিত সাহিত্যিক তথা বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, কেন তিনি বলাগড় বিধানসভা থেকে দূরে বসে আছেন, সেই কদাকার ঘটনাক্রম তুলে আনবেন সেদিন। সেখানেই তৃণমূলের এক নেতা এবং এক নেত্রী, নাম না করে যাঁকে 'ফুলন দেবী' বলে সম্বোধন করেছেন বিধায়ক, তাঁদের কীর্তির রহস্য উন্মোচন করবেন বলে জানিয়েছেন মনোরঞ্জনবাবু। তাতে তাঁর বা তৃণমূল দলের লাভ হবে না ক্ষতি, সেটা তিনি জানেন না বলে দাবি তাঁর। তাঁর ভাষায়, "দুই তিন বছর অনেক অপমান অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। লড়াই এবার এসপার ওসপার।"

"সেই যে- বলাগড়ের ফুলন দেবী ! যে সাথে কুড়ি পঁচিশজন সার্ফ শুটার নিয়ে ঘোরে, যে আমাকে মহিপাল পুরে জনসভা করে মাটিতে পুঁতে দেবে বলেছে! হয় সে আমাকে সত্যি সত্যিই পুঁতে দেবে, আর তা না হলে আমি তাকে তার রাজনৈতিক জীবন থেকে রিটায়ার্ড করিয়ে দেব। দেখবো তাঁর কোলকাতার 'বাবু' তাঁকে কি ভাবে বাঁচায়!" ফেসবুকে বিস্ফোরক মনোরঞ্জন।

ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে স্কুলের চাকরির নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকারও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, 'কোলকাতার বাবু' সহায়তায় স্কুলে আলাদা পদ তৈরি করে ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

মনোরঞ্জনবাবু লিখেছেন, "দীর্ঘ চার পাঁচ বছর একজন শিক্ষিকা হয়ে, একদিন ও ডিউটি না করে- কেমন করে মাইনে পেল সেটাও অভিজিত গঙ্গোপাধায়ের কাছে থেকে আমি জেনে নেবো। আমিও দেখতে চাই তার কতো ক্ষমতা। পথে আমি নেমে পড়েছি, পারলে এখন কাজ না করে মাইনে নিয়ে দেখাক তো দেখি! তাহলে তাঁর যা হবার সে তো হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও আমি ছাড়বো না। আইন কানুন সব কিছুর চেয়ে বড় মানুষের শক্তি। মানুষ নিয়ে পথে নামবো এবার"।

তাঁর দাবি, "অভিজিৎ গাঙ্গুলি একটা ত্রাস। যারা অন্যায় দুর্নীতি করেছে তাদের কাছে ত্রাস অভিজিৎ। দুর্নীতি নিয়ে আমাদের আগে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। মমতা-অভিষেক নমস্য। কিন্তু ওঁদের পক্ষে সর্বত্র নজরদারি চালানো সম্ভব হচ্ছে না।"

মনোরঞ্জনবাবুর আরও দাবি, বলাগড়ে যা চলছে, দলের নেতারা সবাই সব কিছু জানেন, তবু কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ধৃতরাষ্ট্রের মতো চোখ বুজে আছেন সকলে। "এদের উপরে ভরোসা না করে- মনে হচ্ছে এবার আমার লড়াই আমাকেই নিজে লড়ে নিতে হবে।এতে হারবো না জিতবো তা জানিনা, তবে লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালাবো না সেই গ্যারান্টি রইলো। সবাইকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা। জয় দিদি মমতা ব্যানার্জী।"

"লড়াই লড়াই লড়াই চাই , লড়াই করে বাঁচাতে চাই।" ছোটবেলায় শোনা এই স্লোগানের আর কোনও বিকল্প নেই বলেই দাবি বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়কের।পোস্ট করার পর ৪ ঘন্টা বাদে, বুধবার বেলা সওয়া ১২টায় এটির লাইক, মন্তব্য ’ শেয়ার হয়েছে যথাক্রমে ৯০, ৩২ ও ৯। মন্তব্যগুলোর সবই মনোরঞ্জনবাবুর সমর্থনে।


You might also like!