দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও দাবি তুলেছেন যে ভারত–পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতি তাঁর উদ্যোগের ফলেই সম্ভব হয়েছিল। বুধবার তিনি জানান, তাঁর মধ্যস্থতার কারণেই দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য, সংঘর্ষের সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং তার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়।
ট্রাম্পের কথায়, ‘‘মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে কী হচ্ছে? এত বিদ্বেষ কিসের? অনেক দিন ধরেই অস্থিরতা চলছে।’’ ট্রাম্পের দাবি, দু’দেশকেই বাণিজ্যচুক্তি বাতিল এবং শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘আমি বলেছিলাম, আপনারা (ভারত-পাকিস্তান) পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বেন। আমি আপনাদের সঙ্গে কোনও বাণিজ্যচুক্তি করতে চাই না। আপনাদের উপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করব যে কল্পনা করতে পারবেন না।’’ ট্রাম্পের দাবি, মোদীর সঙ্গে কথোপকথনের পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হয়।
বুধবার মার্কিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে কথা বলার সময় ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা যায় ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক অস্থিরতার প্রসঙ্গ। তিনি যখন ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি নিয়ে কথা বলছেন, তখন তাঁর পাশে ছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ। মোদীকে ‘অসাধারণ মানুষ’ বলে সম্বোধন করে ট্রাম্প ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে তাঁর ভূমিকা ব্যক্ত করেন।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে গত ৬ মে তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায় ভারত। নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের হামলায় একাধিক পাক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস হয়। এর পর টানা চার দিন দুই দেশের মধ্যে সংঘাত চলে। সেই সংঘাত থামে ১০ মে। ঘটনাচক্রে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা প্রথম ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তার পর থেকে বার বার সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন একই দাবি ব্যক্ত করে আসছে।
তবে ট্রাম্প বার বার ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিতে মধ্যস্থতায় তাঁর ভূমিকা দাবি করলেও, নয়াদিল্লি ধারাবাহিক ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত-পাক সংঘর্ষের আবহে মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনে কোনও কথা হয়নি বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। তবে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা ভারত অস্বীকার করলেও পাকিস্তান ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছে আমেরিকাকে।