দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ভারতবর্ষ হলো নানা ধর্ম,নানা বর্ণ ও নানা সংস্কৃতির মিলনের স্থান। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যেই পালন করা হয় দোল ও হোলি উৎসব। সেই রঙের উৎসব একটু অন্যভাবে হাজার বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে মণিপুরে - যার নাম ইয়াওশাং'। তবে হোলি এখানে গান, নাচ এবং আরও অনেক ঐতিহ্যশালী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পবিত্র পরব। ছোট থেকে বড় এমনকি বৃদ্ধরাও সমান উৎসাহে সামিল হন এই উৎসবে যার নাম 'ইয়াওশাং'। মণিপুরের বাসিন্দাদের কাছে এই উৎসব আসলে প্রেমের উৎসব।
পাঁচ দিন ধরে চলা এই উৎসবের শুরু হয় 'লামতা ' মাসের পূর্ণিমা থেকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চেই এই তিথি পড়ে থাকে। উৎসবের শুরুতেই খড়ের তৈরি একটি ছোট্ট কুড়েঘর পুড়িয়ে ফেলার রীতি চলে আসছে বহু যুগ থেকে। এই ছোট কুড়েঘরই নাম 'ইয়াওশাং'। এর পরে রয়েছে বেশ কিছু মজার প্রথা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নিজেদের পছন্দমতো জামাকাপড় পড়ে বাড়ি বাড়ি থেকে চাঁদা তুলতে বেরোয়। এই রীতির নাম 'নাকাথেং '। সবাই মিলিত হয় এই আনন্দ উৎসবে।
এই উৎসবের অনেক রীতি নিয়ম আছে। তবে বৃহত্তর সমাজের ক্ষেত্রে এটা আসলে নিজেদের মহামিলনের উৎসব। এই উৎসবের মূল আকর্ষণ 'থবলচোঙ্গবা'। মণিপুরের অন্যতম ঐতিহ্যশালী নাচ। এখানে ছেলে ও মেয়েরা হাতে হাত দিয়ে বৃত্তাকারে গাইতে গাইতে নাচ করেন। 'থবলচোঙ্গবা' কথাটির অর্থ আসলে চাঁদের আলোয় যে নাচ করা হয়, সেটি। সাধারণত, রাতে, পূর্ণিমার চাঁদের নিচেই এই নাচ করা দস্তুর। পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকেই এই নাচে সামিল করা দস্তুর। এই রীতি বহুকাল ধরে চলে আসছে।
তবে মনে রাখতে হবে,এই উৎসবের মধ্যে কিন্তু আছে রঙের খেলাও। এখানেই মিলিত হলো সমগ্র ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মণিপুরের সংস্কৃতি। খুদেদের মধ্যে একে অন্যকে দিব্যি জল দিয়ে ভেজানোর মজার প্রতিযোগিতা চলে। বড়রা মুখে, গলায় রং লাগান। বস্তুত, এই উৎসবের দ্বিতীয় দিনটির নামই হয়েছে এই রং ও জল খেলার ঐতিহ্য মাথায় রেখে। দিনটির নাম 'পিচকারিনুমিত' বা সোজা কথায় পিচকিরির দিন যা চলতে থাকে উৎসবের পঞ্চম দিন পর্যন্ত। তবে গানবাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সংকীর্তন, ভক্তিমূলক মিছিল 'ইয়াওশাং'।