কলকাতা, ২৩ জানুয়ারিঃ তিলোত্তমার বাতাসে দূষণের মাত্রা এমনিতেই আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কলকাতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ময়দানের বাতাসেই দূষণ সবচেয়ে বেশি। তবে শহরতলির বেশ কিছু এলাকাও রীতিমত দূষণের আঁতুড়ঘর। যার মধ্যে ব্যারাকপুর এবং হুগলির কয়েকটি অঞ্চল যেমন রয়েছে, তেমনই আছে হাওড়ার ঘুসুড়ি।
ওই সমস্ত এলাকার বাতাসের মান বেশিরভাগ সময়ই মন্দের দিকে থাকছে। কখনও কখনও তার মান শ্বাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ময়দান এলাকায় দূষণের অন্যতম কারণ যানবাহন। আর শহরতলির ক্ষেত্রে কারখানার ধোঁয়ার সঙ্গে যোগ হচ্ছে ফসলের গোড়া এবং জঞ্জাল পোড়ানো। হাইকোর্টে ময়দানের দূষণ নিয়ে দেড় দশক আগে মামলা হয়েছিল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মতো সৌধ নষ্ট হচ্ছিল এই দূষণের জেরেই। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ধর্মতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানোর মামলাটি করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘ধর্মতলায় দূরপাল্লার বাসগুলি দাঁড়ায়। তা ছাড়া ময়দানের আশপাশে বেশ কয়েকটি জায়গায় ট্র্যাফিক সিগন্যালে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচুর যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকে। তাই ময়দান এলাকায় দূষণ বেশি।’
সুভাষ জানান, ময়দানকে কেন্দ্র করে একটি গ্রিন করিডর তৈরির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই এলাকায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা এমন ভাবে করতে হবে, যাতে যানবাহন সিগন্যালে বেশিক্ষণ না দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেড় দশক আগে যে দূষণ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পক্ষে ক্ষতিকর ছিল, এখন সেটা মানুষের পক্ষে চরম ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে।
বেশির ভাগ সময়েই ময়দান এলাকায় ষণের পরিমাপক সূচক (একিউআই) ছিল ৩০০-র বেশি। পিএম-২.৫ এর হারও বেশি। যানবাহন নিয়ন্ত্রণ না করলে ময়দানের দূষণমুক্তি ঘটবে না। আবার হাওড়ার ঘুসুড়ি, হুগলির তারকেশ্বর, চাঁপদানি, উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুর, নৈহাটি এলাকার বাতাসের একিউআই ৩৫০-এর বেশি থাকছে বেশিরভাগ সময়েই। বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই এলাকাগুলিতে কলকারখানার পাশাপাশি জমে থাকা জঞ্জাল পোড়ানোয় বাড়ছে দূষণ।