Life Style News

2 weeks ago

Health Shocker: ৯ বছরের শিশুর মৃত্যু ‘মাল্টিপল’ হার্ট অ্যাটাকে, শিশুদের হৃদ্‌রোগ নিয়ে চিন্তায় চিকিৎসকেরা

9-year-old dies heart attack
9-year-old dies heart attack

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: রাজস্থানের সিকারের বাসিন্দা এক ৯ বছরের ছাত্রী হৃদ্‌রোগে প্রাণ হারাল। স্কুলে টিফিন চলাকালীন হঠাৎ বুকে যন্ত্রণা শুরু হয় তার। ক্লাসরুমেই বসে খাওয়ার সময় হঠাৎই অস্বস্তি বোধ করে ও অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় সে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পথেই আরও একবার হার্ট অ্যাটাক হয় বলে জানান চিকিৎসকেরা। চিকিৎসার সুযোগ না দিয়েই জীবন শেষ হয়ে যায় ছোট্ট মেয়েটির।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক নন্দকিশোর জানান, প্রথমে মনে হয়েছিল মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছে সে। কিন্তু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ বলছে, একবার নয়, একাধিকবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে ওই ছাত্রীর।

হৃদ্‌রোগ যে কেবল বড়দেরই হবে, এই ধারণাই বদ্ধমূল হয়ে আছে। কিন্তু শিশুদেরও হার্টের সমস্যা দেখা যায়। জন্মগত ভাবে হার্টের সমস্যা অনেকেরই থাকে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে আচমকা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল। রাজস্থানের আগে বেঙ্গালুরুতেও এমন ঘটনা ঘটেছে মাস কয়েক আগে। ক্লাসে বসেই আচমকা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বছর আটেকের এক শিশুকন্যার।

শিশুদের হার্টে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?

ছোটদের হৃদ্‌রোগ নিয়ে অনেক বেশি সাবধানে থাকতে হবে বলেই মত হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমারের। তিনি জানান, শিশুদের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা দু’প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথমটি হল জন্মগত। আর দ্বিতীয়টি জন্মের পরে হওয়া সমস্যা। জন্মগত ভাবে হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা, অর্থাৎ কনজেনিটাল হার্ট ডিজ়িজ় হলে হৃদ্‌যন্ত্রটি আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছোট বা বড় হতে পারে। পরিশোধিত রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক ভাবে না হওয়া বা হৃদ্‌যন্ত্রে ছিদ্র থাকার মতো সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি, ‘পালমোনারি ভাল্‌ভ স্টেনোসিস’ নামে সমস্যাটিও দেখা দিতে পারে।

হৃদ্‌যন্ত্রে ত্রুটি থাকলেও তা জন্মের সময় ধরা না-ও পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে জন্মের কিছু পর থেকে হৃদ্‌যন্ত্রে নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। যেমন, শিশুর অল্পেই হাঁপ ধরবে। খেলাধূলার সময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়বে, শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই সব ছোট ছোট লক্ষণ এড়িয়ে গেলে চলবে না।

হার্টের রোগ থেকে আর কী কী সমস্যা হতে পারে?

শিশুর হার্টের রোগ যদি ধরা না পড়ে, তা হলে আরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন, কাওয়াসাকি ডিজ়িজ হতে পারে। এই রোগ হলে জ্বর হয়। ভাইরাসের সংক্রমণ হলে যেমন জ্বর হয়, এই শিশুদের অনেকটা সেই ধরনের জ্বর আসে। সঙ্গে গা ব্যথা হয়। এর পাশাপাশি, চোখ ও জিভ ভীষণ লাল হয়ে যায়।

রিউম্যাটিক হার্ট ডিজ়িজ়ও হতে পারে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, হৃদ্‌পিণ্ডের সমস্যার ফলে এই রোগ হয়। এই রোগেরও প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর, গা ব্যথা। সঙ্গে হাঁপানি। এই রোগটিই বর্তমানে শিশুদের মধ্যে বেশি হচ্ছে।

সতর্ক থাকুন বাবা-মায়েরা

শিশুর হার্টের সমস্যা জন্মগত হলে ফেলে রাখা চলবে না। অস্ত্রোপচার অবশ্যই করাতে হবে। কী ধরনের অস্ত্রোপচার হবে, তা চিকিৎসকই ঠিক করবেন। প্রয়োজন মতো কখনও শিশুর মাইক্রো সার্জারি, কখনও আবার ওপেন সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা হয়। জন্মের এক মাসের মধ্যেই অস্ত্রোপচার করে নেওয়া উচিত। জন্মের পরের হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে অনেক সময় মাইক্রো সার্জারি করা হয়। তবে ওষুধেও কাজ হয়। শিশুর হার্টের রোগের সঠিক চিকিৎসা হলে ১০০ শতাংশ নিরাময় সম্ভব।

বাবা-মায়েদের শুধু খেয়াল রাখতে হবে, শিশুর ওজন বাড়ছে কি না। তা হলে খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ জরুরি। হার্টের রোগ থাকলে বেশি দৌড়োদৌড়ি, বাস্কেটবল, টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের মতো খেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস থাকলে, সময়ান্তরে চেকআপও করাতে হবে।


অনেক সময় দেখা যায়, শিশুরা বাইরের খাবার, বেশি তৈলাক্ত খাবার খেতে অভ্যস্ত। দীর্ঘ দিন এমন খাবার খেলে তার প্রভাব পড়তে পারে হার্টের উপরে। ছোট থেকেই সুষম খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে, শরীরচর্চার অভ্যাস করাতে হবে। সঙ্গে কমাতে হবে স্ক্রিন টাইম। শিশুরা ধূমপান না করলেও অনেক সময়ে তারা ‘প্যাসিভ স্মোকার’ হয়ে ওঠে। কিছু ক্ষেত্রে, কৈশোর থেকেই তারা মদ্যপান বা ধূমপানের অভ্যেস করে। এরও প্রভাব পড়ে তাদের হার্টের উপরে।

You might also like!