শিলং, ২৮ মে : মেঘালয়ে এখন পর্যন্ত কোনও নিশ্চিত কোভিড-১৯ সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়নি, তবু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কড়া নজরদারি শুরু করেছে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। পার্শ্ববর্তী রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে দুটি কোভিড-১৯ মামলা শনাক্ত হওয়ায় মেঘালয়ের প্রধানসচিব সম্পথ কুমার মেডিক্যাল এক্সপার্ট কমিটিকে নিয়ে আজ এক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন। প্রধানসচিবের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজ্যে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মেডিক্যাল এক্সপার্ট কমিটির মূল্যায়ন-রিপোর্টের ভিত্তিতে এবং অরুণাচল প্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য স্থানে কোভিড-১৯-এর প্রবণতা দেখা দেওয়ায় রাজ্যের সমস্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে তাদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানসচিব সম্পথ কুমার।
রাজ্যের রোগ নজরদারির তথ্য পেশ করে সভায় জানানো হয়েছে, এ বছর কোনও নিশ্চিত কোভিড-১৯ কেস রিপোর্ট হয়নি। যা ২০২০ সালে অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তবে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এ ব্যাপারে অতি সতর্কতা অবলম্বনের ওপর জোর দিয়েছেন। বৈঠকে ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেইল্যান্স প্রোগ্রামের রাজ্য নজরদারি আধিকারিক ২০২০ থেকে চলতি ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত কোভিড-১৯ প্যাটার্ন ট্র্যাকিং সম্পর্কিত বিস্তৃত তথ্য এবং চলমান টিকাদান কভারেজ ও জনস্বাস্থ্য প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া, স্বাস্থ্য আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত করা এবং প্রতিটি জেলায় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির কার্যকারিতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন।
বৈঠকের পর কিছু প্রটোকল জারি করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সে অনুযায়ী মেঘালয়ের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে এখন তাদের কোভিড-১৯ প্রস্তুতি মূল্যায়ন করতে হবে। এগুলির মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ, নিবিড় পরিচর্যার ক্ষমতা, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের জন্য পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এসএআরআই), ইনফ্লুয়েঞ্জা-জাতীয় অসুস্থতা (আইএলআই) এবং অন্যান্য জ্বরের উপসর্গের ওপর নজরদারি রাখে। তাছাড়া প্রশাসনিক নির্দেশিকায় শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল বাজার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান সহ যানবাহন-চলাচল বহুল স্থানগুলিতে পর্যবেক্ষণের ওপর কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, পূর্ববর্তী কোভিড-১৯ অতিমারির সময় তৈরিকৃত অভ্যন্তরীণ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিজিওরগুলি (আইএসওপি) চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আপডেট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে রাজ্যে সতর্কতা বজায় রাখা, জনসাধারণের আতঙ্ক এড়ানো এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।