দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :বর্ষায় বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে গেলেই ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় অনেকেই রুক্ষ ত্বক, ব্রণ ও ফুসকুড়ির যন্ত্রণায় ভোগেন। এর পেছনে দায়ী এক ধরনের ছত্রাক, যা আর্দ্র আবহাওয়ায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ত্বকের লোমকূপে বাসা বেঁধেই এই ছত্রাক ব্রণ, লালচে র্যাশের মতো সমস্যার জন্ম দেয়। শুধু তাই নয়, বর্ষাকালে অতিরিক্ত আর্দ্রতা দাদ, হাজা, একজ়িমা ও স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগের প্রকোপও বাড়িয়ে দেয়।
কোন ছত্রাকের সংক্রমণে চর্মরোগ হচ্ছে?
ম্যালাসেজিয়া ফলিকিউলিটিস নামক ছত্রাকের সংক্রমণে শুধু ব্রণ বা র্যাশ নয়, এগজ়িমার মতো চর্মরোগও দেখা দিতে পারে। ম্যালাসেজিয়া ত্বকে জন্মায়। লোমকূপের ভিতরে থাকে এবং ত্বকের সিবাম খেয়ে বেঁচে থাকে। গরম ও আর্দ্র পরিবেশে, যেমন বর্ষাকালে, এই ছত্রাক দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। এর ফলে লোমকূপগুলিতে প্রদাহ তৈরি হয় এবং সারা ত্বক ব্রণ, র্যাশ বা ফুস্কুড়িতে ভরে যায়। একে বলে ম্যালাসেজিয়া ফলিকিউলিটিস।
এর লক্ষণ সাধারণ ব্রণের চেয়ে আলাদা। বুক, পিঠ, থুতনি, গাল ও হাতের কব্জির কাছে সাদা বা লালচে দানার মতো ব্রণ হয়। চুলকালেই সেগুলি আরও বেড়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ম্যালাসেজিয়া ছত্রাকের কারণে আরও একধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দেয় যাকে বলে ‘টিনিয়া ভার্সিকলার’। ত্বকে হালকা বা গাঢ় রঙের ছোপ দেখা দেয়। সাধারণত বুক, পিঠ ও ঘাড়ে এমন ছোপ দেখা দেয়। সেখানে জ্বালা বা চুলকানিও হতে পারে।
সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কী?
ম্যালাসেজিয়া ফলিকিউলিটিসের চিকিৎসা সাধারণ ব্রণের চেয়ে আলাদা। তাই সে ক্ষেত্রে চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ত্বকে লাগানোর জন্য কিটোকোনাজোল বা সেলেনিয়াম সালফাইড যুক্ত ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা হয়। যদি মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়, তা হলে অ্যান্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলে ওষুধ খাওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে।
ঘরোয়া উপায়ে জলে নিমপাতা ভিজিয়ে রেখে স্নান করতে পারেন, তা হলে ত্বকের প্রদাহ বাচুলকানি অনেক কমে যাবে।
বর্ষার সময়ে ত্বক পরিষ্কার রাখুন। ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরা ভাল। রোজ স্নান করা জরুরি।
বর্ষায় র্যাশ, ফুসকুড়ি ও ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি টোনার ব্যবহার করুন। বাজারচলতি নয়, বরং পুদিনা পাতা ধুয়ে জলে ১৫-২০ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। জল ঠান্ডা হলে স্প্রে বোতল ভরে ব্যবহার করুন। রাস্তায় বেরিয়ে মুখ তেলতেলে হয়ে গেলে, স্প্রে বোতল থেকে কিছুটা পুদিনা টোনার মুখে দিয়ে তুলো দিয়ে মুছে নিতে পারেন। বা তুলো ছাড়াও পুদিনা টোনার মুখে সরাসরি স্প্রে করে নিতে পারেন।
মুখে ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা হলে গোলাপজলের সঙ্গে সামান্য একটু কপূর্রের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। কর্পূর সংক্রমণ রোধে বিশেষ কার্যকর।