কলকাতা, ২০ ডিসেম্বর : ‘‘দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী লোক দেখিয়ে বাংলার প্রাপ্য টাকা চাইতে গিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখানে এসেছি বাংলার বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের বঞ্চনার কথা জানাতে।” শুক্রবারই বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের দিনই নবান্ন এবং রাজভবনে পাল্টা কর্মসূচি করবেন। জানাবেন, বাংলায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের বঞ্চনার কথা। পাশাপাশি যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, সেখানকার মানুষের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনার কথা। সেই মতো বুধবার বেলায় দিল্লিতে মোদী -মমতা বৈঠক শেষ হওয়ার অনতিবিলম্বেই শুভেন্দুবাবুর গাড়ি প্রবেশ করে বাংলার প্রশাসনিক ভবন নবান্নে।
নবান্নে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “বলে যাচ্ছি, আমরা এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। পিছু তাড়া করবই।" শুভেন্দুবাবু জানান, ভিতরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। জানিয়ে আসেন বাংলা বিরোধী নেতাদের বঞ্চনার কথা। যেমনটা করবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুবাবু।
পরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এখানে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের কন্ঠরোধ করা হয়। প্রশাসনিক বৈঠকগুলিতেও ডাকা হয় না তাঁদের। এমনকি, তাঁদের এলাকার জনগণও সুযোগ সুবিধা পান না। এ ভাবে রাজ্য সরকার যে ভাবে বিরোধীদের প্রতি বঞ্চনা করছে, আমরা তারই পাল্টা কর্মসূচি করেছি এখানে।”
দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের অনতিবিলম্বেই নবান্নে এলেন শুভেন্দু অধিকারী। সকাল সাড়ে ১১টার কিছু পরেই তাঁর গাড়ি প্রবেশ করে নবান্নের চত্বরে। তিন জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে ভিতরে ঢোকেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
কাউকে কিছু না বলে, এভাবে নবান্নযাত্রা কেন? জবাবে শুভেন্দুবাবু বলেন, "আগে বললে ঢুকতে দিত না। আমরা চার জন এসেছি। আধ ঘণ্টা আগে ফোনও করেছিলাম, তাতে দেখছি-দেখব করছিল প্রশাসন। তাই আর অপেক্ষা করিনি। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণকে বঞ্চিত করছেন। মুখ্যসচিবের মাধ্যমে বার্তা দিয়ে গেলাম ওঁকে। এখানে বিরোধীদের ভোট দিলে ঘরছাড়া হতে হয়, ভোট লুঠ হয়, আবাস, বার্ধক্যভআতার টাকা দেওয়া হয় না। এই সরকার ফর দ্য ফ্যামিলি, বাই দ্যা ফ্যামিলি, অফ দ্য ফ্যামিলি নীতি নিয়ে চলছে। কেন্দ্র অনেক টাকা দিয়েছে, কী ভাবে নষ্ট হয়েছে, তার তালিকা দিয়েছি।”
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমি সাড়ে ১০টার সময় ফোন করেছিলাম রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলছিলেন না। তাই আমি আর কিছু না বলেই চলে আসি। তবে আমরা আইন মেনে চলা নাগরিক। তাই প্রশাসনিক দফতরের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তাই পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে আসিনি।’’
বুধবার শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে ছিলেন বাংলার তিন বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, বিশাল লামা এবং শঙ্কর ঘোষ। নবান্নে পৌঁছনোর পর তাঁরা হাতে পোস্টার নিয়ে ভিতরে ঢোকেন এবং দেখা করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে।