গুয়াহাটি, ৩১ মে : পরিবেশগত স্থায়িত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে তার প্রাঙ্গণ থেকে প্লাস্টিক দূষণ সমাপ্ত করতে এবং কয়েকটি মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনকে প্লাস্টিক-মুক্ত স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি অভিযান শুরু করেছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ অভিযানের একটি অংশ হিসেবে মালিগাঁওস্থিত উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য কার্যালয়ে ২৯ মে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চস্তরের বৈঠকে এই পদক্ষেপের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়। এই সভায় উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার চেতনকুমার শ্রীবাস্তব, সমস্ত ডিপার্টমেন্ট ও ডিভিশনের বরিষ্ঠ আধিকারিক এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি গুয়াহাটি (আইআইটিজি)-র সম্মানিত বিশিষ্ট অতিথি অধ্যাপক বিমল কাটিয়ার উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার এক প্রেস বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা। বিবৃতিতে তিনি জানান, এই অভিযান উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওেয় বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫-এর বৃহত্তর উদযাপনের অংশ, যা ২২ মে থেকে ৫ জুন (২০২৫) পর্যন্ত চলবে এবং এটি ভারতীয় রেলওয়ের স্বচ্ছ ভারত এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব লক্ষ্যের সাথে অনুরূপ। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো আচরণে পরিবর্তন আনা, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নির্মূল করা এবং স্টেশন চত্বরে স্থায়ী বিকল্প ব্যবহারের প্রচার করা।
সভায় অধ্যাপক বিমল কাটিয়ার "উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়েতে প্লাস্টিক দূষণের সমাপ্ত করা এবং উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পাঁচটি স্টেশনকে প্লাস্টিক-মুক্ত করা" শীর্ষক একটি আকর্ষণীয় বক্তৃতা প্রদান করেন। তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যের ফলে সৃষ্ট পরিবেশগত ও স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন এবং পদ্ধতিগত ও ব্যবহারগত পরিবর্তনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অধ্যাপক কাটারিয়া প্লাস্টিকের কার্যকর বিকল্পগুলিও উপস্থাপন করেন এবং বলেন, কীভাবে ভারতীয় রেলওয়ে স্থায়ী সার্বজনিক পরিকাঠামোর জন্য মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।
কার্য পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে সচেতনতা অভিযান, বিক্রেতাদের সংবেদনশীলতা বাস্তবায়ন করবে এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় মহিলা-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলির সাথে সমন্বয় সাধন করবে, যার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মহিলা উদ্যমিতা অভিযান (এমএমইউএ)-এর মতো উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই অংশীদারিত্বের উদ্দেশ্য ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট (ওএসওপি) স্টলের মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বায়োডিগ্রেডেবল পণ্যের একটি স্থায়ী সরবরাহ শৃঙ্খল স্থাপন করা। বিক্রেতাদের পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং সমাধান গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা হবে এবং প্রতিটি স্টেশনে একটি ডেডিকেটেড টাস্কফোর্স অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে। আইআইটি গুয়াহাটি এই মিশনের কারিগরি অংশীদার হিসেবে কাজ করবে, যা বায়োডিগ্রেডেবল সামগ্রী উৎপাদন ও বিতরণের জন্য দেশীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনে সহায়তা করবে। এই বিকল্পগুলি ধীরে ধীরে যাত্রী এবং বিক্রেতাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্য প্রতিস্থাপন করবে। এই সহযোগিতা দ্বারা স্থানীয় স্টার্টআপ এবং নির্মাতাদেরকেও জড়িত করা হবে। ফলে স্কেলেবিলিটি, ক্রয়ক্ষমতা এবং দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব নিশ্চিত করবে।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার অধ্যাপক কাটিয়ারের অন্তর্দৃষ্টির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্লাস্টিক-মুক্ত, পরিবেশগতভাবে দায়বদ্ধ রেল ব্যবস্থা তৈরি করতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের নিষ্ঠার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি রেলওয়ে কর্মচারী, বিক্রেতা, যাত্রী এবং স্থানীয় জনসাধারণ সহ সকল অংশীদারদের এই সবুজ রূপান্তরে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। নোডাল অফিসারদের মনোনয়ন, স্টেশন-নির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং আইআইটি গুয়াহাটির সাথে চুক্তির প্রস্তুতি সহ স্পষ্ট কার্যপন্থা নিয়ে বৈঠকটি সমাপ্ত হয়েছে।